আমাকে গুলি করুন, কিন্তু আর কাউকে আঘাত করবেন না”—ফেসবুক পোস্টে ইশরাক হোসেন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে হামলার ঘটনার পর ফেসবুকে আবেগঘন বার্তা দিলেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। বললেন, “আমাকে গুলি করুন, কিন্তু আর কাউকে ছুঁবেন না।” হামলাকে ‘ষড়যন্ত্র’ দাবি করে দিলেন কড়া ব..

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নগর ভবনে মঙ্গলবারের রক্তাক্ত হামলার ঘটনার পর, রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং সামাজিক মাধ্যমে উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।

ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাতেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক আবেগভরা স্ট্যাটাসে ইশরাক লিখেন

প্রয়োজনে আমাকে গুলি করুন, কিন্তু আমার জন্য আর কাউকে আঘাত করবেন না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও আসিফ ভূঁইয়াকে বলছি—বুকের মধ্যে গুলি চালিয়ে দিন, তবু আমার সমর্থকদের ওপর ছুরি চালাবেন না।

এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, হাজার হাজার শেয়ার, মন্তব্য এবং প্রতিক্রিয়ায় ভরে ওঠে ফেসবুকের টাইমলাইন।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন ইশরাক। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন—
“নগর ভবনে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিলো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করা। নাগরিক সেবাকে জিম্মি করে আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট করাই ছিল মূল লক্ষ্য।

তিনি এ হামলাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আখ্যা দেন এবং বলেন, “যখন নাগরিক সেবা পুনরায় চালুর চেষ্টা করা হলো, তখন থেকেই একশ্রেণির চক্র আমাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়ে।

ইশরাক সরাসরি অভিযোগ করেন যে, “আজ আমার নাম ব্যবহার করে ফ্যাসিস্টদের উচ্ছিষ্ট দোসররা অস্ত্র নিয়ে নগর ভবনে ঢুকে পড়ে। আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে থাকা কর্মীদের ওপর তারা প্রাণঘাতী হামলা চালায়। এ হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তিনি বলেন, “তারা চেয়েছে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে—একদিকে আমার নামে অপপ্রচার চালিয়ে সেবার পরিবেশ ধ্বংস করা, অন্যদিকে আন্দোলনে থাকা কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা।

আবেগময় ভাষায় ইশরাক তাঁর বার্তায় বলেন, “আমার জন্য কাউকে জীবন দিতে হবে না। আমি দাঁড়াতে রাজি, কিন্তু আমি চাই না আমার পাশে দাঁড়ানোর কারণে আর কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরুক।

এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি-নির্ভর নয়। এটি একটি আদর্শিক আন্দোলন, যেখানে জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।

নগর ভবনের এই হামলাকে ঘিরে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন। কারা এর পেছনে, কার নির্দেশে এই হামলা—এসব প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজপথ থেকে সামাজিক মাধ্যম পর্যন্ত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আন্দোলনের শক্তিকে দুর্বল করতে এই ধরনের হামলা অতীতেও চালানো হয়েছে, এবারও হতে পারে একই চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি।

ইশরাক হোসেনের বক্তব্য যেন প্রতিবাদের এক নতুন ভাষা—একটি জনসভায় নয়, রক্তাক্ত সড়কের প্রান্তে দাঁড়িয়ে, নিজের বুক পেতে দিয়ে বলছেন, “আমাকে মারুন, কিন্তু আমার জনগণকে নয়।”
এই বার্তা কেবল তাঁর দলের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ নয়, বরং রাজনীতিতে নৈতিকতার এক শক্তিশালী উচ্চারণ।

کوئی تبصرہ نہیں ملا