বাংলা: প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন ড. মিজানুর রহমান আজহারী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য প্রকাশ করেছেন আবেগঘন পোস্ট, জাতি চিরকাল তার খিদমাহ স্মরণ করবে।
আজ ১৪ আগস্ট, প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ এবং মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২৩ সালের এই দিনে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার মৃত্যুতে জাতি হারালেন এক অমূল্য ইসলামী ব্যক্তিত্ব, যিনি কুরআনের গভীর ব্যাখ্যা ও ইসলামী শিক্ষার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ড. মিজানুর রহমান আজহারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, “আল্লামা সাঈদী রহিমাহুল্লাহ-র অনন্য খিদমাহ জাতি যুগ যুগ স্মরণ করবে। আল্লাহ তাআলা তার পবিত্র কালামের একনিষ্ঠ এই বাণী বাহককে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন।”
তবে এই মৃত্যু নিয়ে নানা বিতর্কও রয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এবং রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেছেন যে, আল্লামা সাঈদীকে চিকিৎসার মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, সাঈদীকে হাসপাতালে চিকিৎসার সময় যথাযথ সেবা প্রদান করা হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার যথাযথ যত্ন নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানও একটি বিবৃতিতে জানান, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে আল্লামা সাঈদীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তার সন্তান ও স্ত্রীকে সাক্ষাৎ করতে দেয়নি, এমনকি জানাজা আদায়ের অনুমতিও প্রাথমিকভাবে দেয়া হয়নি। ঢাকায় লাখ লাখ তৌহিদী জনতা জানাজা আদায়ের দাবি জানালে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং গুলি চালানোর কারণে শতাধিক মানুষ আহত হন। পরিশেষে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ তার পিরোজপুর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ফেসবুকে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর পোস্টে মন্তব্য অংশে সাধারণ জনগণ তার জন্য দোয়া করছেন। মো. সোলাইমান কবির মাসুম লিখেছেন, “শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবন, কর্ম ও কুরআনের তাফসির নিয়ে যত বেশি সেমিনার বা আলোচনা সভা হবে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম উনার জীবন ও কর্ম জানতে পারবে।” রিয়াদ আহসান রানা লিখেছেন, “আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা প্রিয় আল্লামাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ স্থানে সন্মানিত করুন। যারা উনাকে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, তাদের হেদায়েত দিন।”
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবন ও খিদমাহ মুসলিম জনতাকে শিক্ষার পথ দেখিয়েছে। তার তাফসির ও ইসলামী চিন্তাধারার অবদান আজও তরুণ শিক্ষার্থী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অমূল্য দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তার মৃত্যু আমাদের জন্য শুধু শোকের নয়, বরং তার জীবন ও শিক্ষা অনুসরণের এক সুযোগও।
লাখ লাখ মানুষ আজও তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, দোয়া করছেন এবং তার খিদমাহকে চিরন্তন রাখার প্রতিজ্ঞা করছেন। জাতি চিরকাল আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর তাফসির, শিক্ষা ও ইসলামী কর্মকাণ্ডকে স্মরণ করবে।