close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আজকের মাইরের পর থেকে ছাত্রলীগের নামও মুখে নিবো না

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Former Chhatra League leader Wahidul Alam was brutally assaulted at Chittagong University. His explosive Facebook post after the incident sparked intense discussion on campus.

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ওয়াহিদুল আলমকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে। ঘটনার পর ফেসবুকে বিস্ফোরক মন্তব্য করে আলোড়ন তোলেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে ফের আলোচনায় এলো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওয়াহিদুল আলম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের এই শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সামনে ভয়াবহভাবে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, চলন্ত একটি মোটরসাইকেল থেকে হঠাৎ ওয়াহিদুলকে ফেলে দিয়ে ৪-৫ জন অজ্ঞাত যুবক একত্রে তার ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলটি অন্ধকার থাকায় কারা এই হামলা চালিয়েছে তা কেউ চিনে উঠতে পারেনি।

একজন শিক্ষার্থী, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বলেন, “আমরা কয়েকজন বন্ধু একসঙ্গে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দেখি একজনকে বাইক থেকে ফেলে দিয়ে ৪-৫ জন মিলে মারধর করছে। শুরুতে মনে হয়েছিল অ্যাক্সিডেন্ট, কিন্তু পরে যা ঘটেছে তা ভয়াবহ। আমরা আতঙ্কে সরে যাই।”

ওয়াহিদুল আলম ছাত্রলীগের বিতর্কিত গ্রুপ সিএফসি-এর সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় তার নাম উঠে আসে। শুধু তাই নয়, গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন তিনি।

গত বছরের ১৪ জুলাই ছাত্রলীগের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে শাটল ট্রেনে হেনস্তা করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসার সময়ও ওয়াহিদুল উপস্থিত ছিলেন। সেই ঘটনার সময় তিনি সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ আছে। এমনকি ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শাহরিয়াজ মোহাম্মদকে মারধরের সময়ও ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

এই হামলার ঘটনার পর ওয়াহিদুল আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন,
“আজকের মাইরের পর থেকে ছাত্রলীগের নামও মুখে নিবো না। কুত্তার বাচ্চাগুলোর জন্য আজকে চবিতে কঠিন ধোলাই খাইলাম। চবির আশেপাশে মুজিবের জারজ সন্তানেরা কেউ আসবেন না।”
তার এই পোস্টটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।

এ বিষয়ে চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হয়ে এত অপরাধ করার পরও কীভাবে সে এখনো ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায়? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি চোখ বুজে আছে? প্রক্টরিয়াল বডি শুধু হালকা চিকিৎসা দিয়ে তাকে ছেড়ে দিলো – এটা কি স্পিরিট অফ জুলাই?”

ছাত্রশিবিরের চবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, “ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত একজনকে মারধর করা হয়েছে শুনেছি, তবে কে বা কারা করেছে তা আমরা জানি না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন বলেন, “একটি চোর ধরার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আহত শিক্ষার্থী নিজেই জানায়, সে আগে ছাত্রলীগ করতো, এ কারণেই তাকে মারধর করা হয়েছে। তবে সে কেউকেই চিনতে পারেনি।”

তিনি আরও জানান, আহত শিক্ষার্থীকে চবি মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তার দুই বন্ধু এসে তার জিম্মায় নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আতঙ্ক ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও তার প্রভাবশালী সাবেক নেতারা কীভাবে এখনো দাপটের সাথে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করে?

Ingen kommentarer fundet