আইন মেনেই এই ‘ভুয়া বোর্ড’ ছুড়ে ফেলা হবে, বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ইশরাক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
BNP leader Ishraq Hossain has warned that once a people’s government is established, the so-called “fake cricket board” will be legally dismantled. He accused the recent BCB election of fraud and reje..

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের আইন মেনেই বর্তমান ‘ভুয়া’ ক্রিকেট বোর্ডকে লাথি মেরে ছুড়ে ফেলা হবে। বিসিবির নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তিনি এই নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাম্প্রতিক নির্বাচন নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিএনপি নেতা ও দলীয় চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের এক বক্তব্যে। তিনি এই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে একে ‘জালিয়াতি নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছেন। ইশরাক স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের আইন মেনেই এই ভুয়া বোর্ডকে লাথি মেরে ছুড়ে ফেলা হবে।”

সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক এই মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন, বিসিবির এই নির্বাচনকে সাধারণ জনগণ এবং ক্রীড়া সংগঠকরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার ভাষায়, “বিসিবির জালিয়াতির সিলেকশন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সাধারণ জনগণ ও ক্রীড়া সংগঠকরা।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা নীরব আছি শুধুমাত্র দেশকে স্থিতিশীল রাখতে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তবে এই নীরবতা স্থায়ী নয়। খুব শিগগিরই এই জাতীয় বেইমানদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে ইনশাআল্লাহ।”

ইশরাকের এই মন্তব্য প্রকাশের পরপরই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা পোস্টটি শেয়ার করে বিসিবি নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে এই নির্বাচনকে ‘একতরফা ও প্রভাবিত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

অন্যদিকে, সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তিনটি ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ২৩ জন পরিচালক। ক্যাটাগরি-১ (জেলা ও বিভাগ) থেকে ১০ জন, ক্যাটাগরি-২ (ঢাকা ক্লাব) থেকে ১২ জন এবং ক্যাটাগরি-৩ (সাবেক ক্রিকেটার ও সরকারি প্রতিষ্ঠান) থেকে নির্বাচিত হয়েছেন একজন।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৯১ জন, যদিও শুরুতে এটি ১৯২ হওয়ার কথা ছিল। নরসিংদী জেলা কাউন্সিলর মনোনয়ন না দেয়ায় একজন ভোটার কমে যায়। আদালতের নির্দেশে ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ায় নির্বাচনটি শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

ভোটের সময় কোনো বিশৃঙ্খলা বা কারচুপির অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে। ভোটার এবং অনুমোদিত ব্যক্তিদের ছাড়া কাউকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবুও নির্বাচনের আগে থেকেই প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এবং কিছু প্রার্থীর সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়।

এর আগে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ কয়েকজন প্রার্থী প্রভাবিত নির্বাচনের আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। তাদের এমন অবস্থান নিয়েই শুরু হয় বিসিবি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা নিয়ে তীব্র আলোচনা। সেই প্রেক্ষাপটে ইশরাক হোসেনের এই বক্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক মাত্রা যোগ করেছে ক্রিকেট প্রশাসনের বিতর্কে।

বিএনপি মহলের অনেকে বলছেন, দেশের প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতোই ক্রীড়া প্রশাসনেও রাজনৈতিক প্রভাব গভীরভাবে প্রোথিত, এবং এই নির্বাচনও তারই প্রতিফলন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ক্রীড়া সংগঠকরা দাবি করছেন, নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে, এখানে কোনো জালিয়াতির সুযোগ ছিল না।

তবে ইশরাক হোসেনের বক্তব্যে যে বিসিবি নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, তা এখন সামাজিক মাধ্যমে স্পষ্ট। অনেকে এই বক্তব্যকে একটি ‘সাহসী অবস্থান’ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন— রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে দেশের ক্রিকেট প্রশাসন আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনের এই জটিলতা রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রতিধ্বনি তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, ইশরাক হোসেনের এই হুঁশিয়ারির পর বিসিবি এবং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কি না।

コメントがありません


News Card Generator