জামায়াত নেতা রেজাউল করিম বলেছেন, সিলেটে পাথরের হরিলুট চলছে, দুর্বল প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আগে পাথর দিয়ে মানুষ মারা হতো, এখন সব পাথর গিলে খাওয়া হচ্ছে।
সিলেটে পাথর লুটপাটের সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এত ক্ষুধার্ত হলে তো তারা গোটা বাংলাদেশই গিলে ফেলবে। আগে মিটফোর্ডে পাথর দিয়ে মানুষ মারা হয়েছে, আর এখন সিলেটের সব পাথর খেয়ে ফেলা হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহর শিবির আয়োজিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দ্বিতীয় শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রেজাউল করিম বলেন, “সিলেটে পাথর খাওয়ার মতো পরিস্থিতি শুরু হয়ে গেছে। আমাদের প্রশাসন এতটাই দুর্বল ও মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়েছে যে ৩-৪ হাজার কোটি টাকার পাথর হাজার হাজার ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যাওয়ার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এখন তারা এদিক-সেদিক পাথরের খোঁজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে জুলাইযোদ্ধাদের বাংলাদেশ। আমরা যেনতেন পদ্ধতিতে এই দেশ কারও হাতে তুলে দেব না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্মীপুর শহর শিবিরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন শহর শিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল হামদু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য সরদার সৈয়দ আহমেদ, সদর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জাহিদুল ইসলাম এবং লক্ষ্মীপুর শহর শিবিরের অফিস সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ফয়সাল প্রমুখ।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রেজাউল করিমের এই মন্তব্য শুধু পাথর লুটের ঘটনা নয়, বরং সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচিত হবে। সিলেটে পাথর লুটপাটের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকলেও প্রশাসনিক তৎপরতার অভাব এবং অবৈধ ব্যবসায়ীদের প্রভাবের কারণে এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, সিলেটের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হওয়া শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং পরিবেশগত বিপর্যয়ও ডেকে আনছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান অবৈধ খনন ও লুটপাট বন্ধ না হলে সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, রেজাউল করিমের বক্তব্য আসন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করবে। জুলাই আন্দোলনের পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেভাবে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে সরকারের জন্য বিরোধী পক্ষের সমালোচনার চাপ ক্রমশ বাড়ছে।