হেরাত প্রাদেশিক পুলিশের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ সাইদি জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি ইরান থেকে কাবুলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। যাত্রীরা সবাই আফগান নাগরিক, যারা দীর্ঘদিন ইরানে শরণার্থী হিসেবে ছিলেন।
সাইদি জানান, দ্রুতগামী বাসটির প্রথমে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এরপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জ্বালানিবাহী একটি ট্রাককে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই অনেক যাত্রী মারা যান। নিহতদের মধ্যে ট্রাকের চালক, তার সহকারী ও মোটরসাইকেলের দুই আরোহী ছাড়া বাকিরা সবাই বাসযাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় বেঁচে গেছেন মাত্র তিনজন।
দুর্ঘটনায় নিহত অধিকাংশ যাত্রী ইরান থেকে ফেরত আসা শরণার্থী ছিলেন। সোভিয়েত আগ্রাসনের সময় থেকে শুরু করে কয়েক দশক ধরে বিপুল সংখ্যক আফগান ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে চলতি বছরের শুরুতে ইরান সরকার এসব শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধু জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ৬০ হাজার আফগান ইরান থেকে নিজ দেশে ফিরে এসেছেন।
আফগানিস্তানে প্রাণঘাতী সড়ক দুর্ঘটনা নতুন নয়। দুর্বল সড়ক অবকাঠামো, পাহাড়ি দুর্গম পথ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং চালকদের অসতর্কতা নিয়মিত বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মাত্র কয়েক মাস আগে, গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে একটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকার ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে অন্তত ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
হেরাতের বাসিন্দারা বলছেন, অব্যবস্থাপনা ও ট্রাফিক আইন অমান্যই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। অনেকের মতে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের দুর্বল অর্থনীতি এবং প্রশাসনিক অদক্ষতার কারণে সড়ক নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব হচ্ছে না।
হেরাতের সাম্প্রতিক এই দুর্ঘটনা আবারও তুলে ধরেছে আফগানিস্তানের সড়ক নিরাপত্তার ভয়াবহ চিত্র।