close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

আবহমান সংস্কৃতি বাঁচালেই জ্বলবে মুক্তির আলো: ছায়ানটের রমনা বটমূলে বার্তা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রমনার প্রভাতের শান্ত বাতাসে ভেসে এল এক অগ্নিময় বার্তা—উদার সমাজ গঠনের ডাক দিলেন ছায়ানটের সারওয়ার আলী। ঐতিহ্য, মুক্তচিন্তা আর সহনশীলতা ধারণ করলেই মিলবে জাতির কাঙ্ক্ষিত মুক্তি!..

রমনার ছায়ানট মঞ্চে নতুন ভোর, নতুন বার্তা:
আজ পহেলা বৈশাখ। রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত বাংলা নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠানে উঠে এলো এক দীপ্ত বার্তা—আবহমান সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধই বাঙালির মুক্তির পথ। ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ড. সারওয়ার আলী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, "যদি জাতি ঐতিহ্য, মুক্তচিন্তা এবং সংস্কৃতিকে বুকে ধারণ করে, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ হবে আলোকোজ্জ্বল ও শান্তিময়।"

ভোরের শুরুতেই শিল্প ও সংগীতের পরশ:
সকালের প্রথম প্রহরে, সূর্য উঠার আগেই রমনা উদ্যান মুখর হয়ে ওঠে শিল্প ও সংস্কৃতির সুরে। সকাল সোয়া ছয়টায় ভৈরবী রাগে সুপ্রিয়া দাশের রাগালাপ দিয়ে সূচনা হয় ছায়ানটের এবারের বৈশাখী আয়োজন। এরপর একে একে নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় বাঙালিয়ানা ছড়িয়ে পড়ে পুরো রমনা প্রাঙ্গণে। সকাল সাড়ে আটটায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় এই আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান।

নববর্ষে নবচিন্তার আহ্বান:
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে "নববর্ষের কথন" শীর্ষক বক্তব্যে ড. সারওয়ার আলী স্মরণ করিয়ে দেন জাতির সংগ্রামের ইতিহাস। তিনি বলেন, “পঞ্চাশ বছর আগে যে বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেই পথচলার সাক্ষ্য মেলে আমাদের শিল্প-সাহিত্য ও স্থাপত্যে।” তিনি উল্লেখ করেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষ উদযাপন একটি অসাম্প্রদায়িক ঐক্য ও সৌহার্দ্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও জানালেন:
ড. আলী আরও বলেন, “একটি আলোকিত, মানবিক রাষ্ট্র কেবল সরকারের দায়িত্বে নয়, সমাজকেও তার অংশ নিতে হবে। হিংসা, বিভক্তি, নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গড়তে হবে। সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে বুকে ধারণ করেই সম্ভব মানবতার মুক্তি।”

জাতি হিসেবে আত্মসমালোচনার মুহূর্ত:
তিনি বলেন, “নতুন বছরের শুরুতে যখন আমরা পেছন ফিরে তাকাই, তখন দেখি—একদিকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা, অন্যদিকে হতাশা, বৈষম্য আর সংকট। তবে এই অন্ধকার দূর করা সম্ভব শুধুমাত্র উদারতা, সহিষ্ণুতা এবং মূল্যবোধকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করেই।”

আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি সংস্কৃতি:
ছায়ানটের সভাপতি মনে করেন, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে এবং মুক্তচিন্তার চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মানবিক ও উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, “আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলেই জাতির মুক্তির পথ সুগম হবে।”


🔔 উপসংহার:
ছায়ানটের এই বার্তা শুধু পহেলা বৈশাখের গান কিংবা সাংস্কৃতিক আয়োজনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি জাতি পুনর্গঠনের দর্শন। যেখানে মুক্তচিন্তা, ঐতিহ্য এবং মানবিকতা মিলেই গড়ে উঠবে একটি সহনশীল ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ।

Hiçbir yorum bulunamadı