আবারো পরমাণু কেন্দ্রে নির্মাণকাজ শুরু করেছে ইরান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে, যেখানে তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপ ও গর্ত ভরাটসহ মেরামতের কাজ চলছে।..

ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে আবারও নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। উপগ্রহ চিত্র প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টেকনোলজিসের সর্বশেষ প্রকাশিত উপগ্রহ ছবি থেকে এই তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, মার্কিন বোমা হামলার পরপরই ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে ব্যাপক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।

২৯ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, ফোর্দো স্থাপনায় একটি নতুন নির্মিত সড়কের ওপর ভারী নির্মাণযন্ত্র যেমন খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) ও ক্রেন কাজ করছে। এই সড়কটি সেই এলাকাকে সংযুক্ত করেছে যেখানে মার্কিন বাহিনী বাঙ্কার-ব্লাস্টার বোমা নিক্ষেপ করেছিল। এই সড়কের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত মেরামত কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে।

পার্বতের ঢাল বরাবর নিচের দিকে আরও বিভিন্ন নির্মাণযন্ত্র যেমন বুলডোজার এবং ট্রাক সারিবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। উপগ্রহ চিত্রে কিছু বুলডোজারের কার্যকরী কাজের চিত্র স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। নির্মাণকাজ শুধু পাহাড়ি এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়, পারমাণবিক স্থাপনার পূর্ব পাশেও ব্যাপক মেরামত কাজ চলছে। সেখানে এক ভবনের ধ্বংসাবশেষে যন্ত্রপাতি কাজ করছে, যা ইসরায়েলি বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য যে, মার্কিন হামলার একদিন পরই ইসরায়েলি এই বিমান হামলা ঘটে।

পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ডেভিড আলব্রাইট জানিয়েছেন, ২৮ জুনের উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে অনুমান করা যাচ্ছে, ইরান সেখানে গর্ত ভরাট, ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন এবং তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে তারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার দ্রুত পুনর্গঠন ও কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার পর দাবি করেছিলেন যে, ‘আমরা ইরানের মূল পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ সুবিধাগুলো ধ্বংস করে দিয়েছি।’ তবে ইরানের এই মেরামত ও নির্মাণকাজ তার উল্টো বার্তা দিচ্ছে যে তারা আবারও পারমাণবিক কার্যক্রম চালু করার পথে।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরান চাইলে কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পারে। এর ফলে বিশ্ব নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই নির্মাণকাজ এবং পারমাণবিক কেন্দ্রের দ্রুত পুনর্বাসন আন্তর্জাতিক আলোচনাকে জটিলতর করবে। মার্কিন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে আবারও কঠোর কূটনৈতিক চাপ ও পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করবে।

এই নির্মাণকাজের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকতে হবে এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি কঠোর করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে ফোর্দো কেন্দ্রের পুনর্গঠন পরবর্তী সময়ে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কতটা বাড়তে পারে তা বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

No se encontraron comentarios