চিকিৎসার জন্য আবারও লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে ফলোআপে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আবারও লন্ডনে যাচ্ছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং তাঁর ব্যক্তিগত মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় ফলোআপ চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় বেগম জিয়ার লন্ডন যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং সেখানে প্রায় চার মাস অবস্থান করেন। জানুয়ারির বেশিরভাগ সময় তিনি লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরবর্তীতে বাকি সময় তিনি ছিলেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায়, যেখানে তাঁর চিকিৎসা চলমান ছিল।
বর্তমানে আবারো চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার অবস্থার পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন ও ফলোআপ চিকিৎসা বিদেশে করানো প্রয়োজন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়ার চিকিৎসার এই নতুন ধাপ শুরু হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত শেখ হাসিনার শাসনামলে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার রায় এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ সময় তিনি গৃহবন্দি ও কারাবন্দি ছিলেন। তাঁর পরিবার এবং বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে আসছিল। এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহ এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল।
কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এসব অনুরোধ উপেক্ষা করে এবং অনেক সময় তির্যক ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে তাঁর অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করেছে।
শেষমেশ, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের মুখে পড়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর সরকারের একাধিক শীর্ষ নেতা জেলে যান অথবা আত্মগোপনে চলে যান। সরকার পতনের পরই মুক্ত হন বেগম খালেদা জিয়া। তখন মধ্যপ্রাচ্যের কাতার আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠানো হয়।
এখন আবার তাঁর চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় শুরু হচ্ছে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চিকিৎসার গতি ও ফলোআপ সম্পন্ন করে যথাসম্ভব দ্রুতই দেশে ফেরার চিন্তা রয়েছে বেগম জিয়ার।
দেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও সক্রিয় ভূমিকা এখনো অনেকের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর অনুপস্থিতিতে দলীয় কার্যক্রম অনেকটাই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে, ফলে তাঁর বিদেশযাত্রা ও চিকিৎসা অগ্রগতির দিকে রাজনৈতিক মহলও নজর রাখছে।