আওয়ামী লীগের আগামীকালের (১৩ নভেম্বর) ঘোষিত ‘লকডাউন’ নিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে, তাদের জনগণের সঙ্গে সংযোগ পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত এ নতুন সংগঠনের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক ও রাজনীতিকরা।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আগামীকাল সব দল মাঠে থাকবে। আওয়ামী লীগকে মাঠে ঠেকাতে এনসিপির একজন হাসনাত আবদুল্লাহই যথেষ্ট। আওয়ামী লীগের এখন রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, তারা কেবল দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জনগণ তাদের ঘৃণা করছে, ভয় নয়।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে এখন এমন অবস্থা যে, জনগণ পরিবর্তন চায়। তারা জানে, এই সরকারের দিন শেষ। তাই আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ বা হুমকি-ধামকিতে কেউ ভয় পাবে না। বরং জনগণ এখন তাদের কর্মকাণ্ডে ঘৃণা প্রকাশ করছে।”
গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে জামায়াতসহ ৮টি রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনসিপি নেতা বলেন, “আপনারা দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরবেন না। এই গণভোট বাংলাদেশে হবেই। বিএনপি ১০০ বছর চেষ্টা করলেও এটা ঠেকাতে পারবে না। কারণ, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী এখন পরিবর্তনের পক্ষেই।”
তিনি মনে করেন, গণভোটের ধারণাটি জনগণের মনের ভাষা। “খালেদা জিয়া একসময় এই দেশের জনগণের পালস ধরতে পেরেছিলেন বলেই বিএনপি একটি বড় দল হিসেবে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু বর্তমান বিএনপি নেতারা যদি সেই জনগণের অনুভূতি বুঝতে না পারেন, তাহলে নিজের পায়ে কুড়াল মারার দায়ও তাদেরই নিতে হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের বর্তমান অবস্থান প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “এই সরকার এখন জনবিচ্ছিন্ন। গত এক বছরে যারা ন্যায্য অধিকার নিয়ে সরকারের কাছে গেছেন, তাদের কেউই প্রতিশ্রুতির ফল পাননি। সরকার কথা দেয়, কিন্তু বাস্তবায়নের জন্য জনগণকেই আবার রাস্তায় নামতে হয়— এটা সরকারের জন্য লজ্জার।”
তিনি আরও বলেন, “যে সরকার জনগণের দাবিতে সাড়া দিতে ব্যর্থ, তাদের টিকে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। আজকে সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াই করছে, জনগণের আস্থা হারিয়েছে অনেক আগেই।”
এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন বক্তারাও বলেন, দেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মূল কারণ হলো সরকারের জনগণবিমুখ নীতি। তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় একটি নতুন ঐক্য গঠনের আহ্বান জানান।
শেষে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের পক্ষেই আছি। কিন্তু যারা জনগণের কণ্ঠরোধ করতে চায়, তাদের সময় শেষ। বাংলাদেশে এখন গণভোট হবে, আর সেই গণভোটেই জনগণ জানিয়ে দেবে— তারা কার পক্ষে।”



















