close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আ.লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১২ সুপারিশে প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার খোলাচিঠি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরাপত্তা খাতের কাঠামোগত সংস্কার, র‍্যাব বিলুপ্তি ও গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচারের নিশ্চয়তা দিতে ১২ দফা সুপারিশ করেছে।..

বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরশাসক ও কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার এবং নিরাপত্তা খাতে জরুরি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি লেখা এক যৌথ খোলাচিঠিতে এই সংস্থাগুলো ১২টি সুপারিশ তুলে ধরেছে, যার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশে স্থায়ী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

চিঠির শুরুতে সংস্থাগুলো জুলাই বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৌলিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইন সংস্কার শুরু করার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রশংসা করে। তবে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, নিরাপত্তা খাতে এখনও কাঠামোগত সংস্কার শুরু হয়নি এবং অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে না।

র‍্যাব বিলুপ্তি ও ডিজিএফআইয়ের ক্ষমতা সীমিতকরণের সুপারিশ

সংস্থাগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. নিরাপত্তা খাতে সংস্কার: র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করা এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই)-এর ক্ষমতা সীমিত করা জরুরি। র‍্যাবের অবাধ নির্যাতন, হত্যা ও গুমের ইতিহাসের কারণে এই সংস্থাকে সংস্কারের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে, ডিজিএফআইয়ের ভূমিকা স্পষ্টভাবে সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। ২. জবাবদিহিতা ও বিচারের নিশ্চয়তা: গত পনেরো বছরে সংঘটিত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইসিটি কর্তৃক সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ গঠনকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছে। ৩. গুমের অপরাধ নির্ধারণ: আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী গুমকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ’ দ্রুত পাস করার এবং গুম তদন্ত কমিশনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও আইনের সংস্কার

চিঠিতে রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং আইনের সংস্কারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে:

  • আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার: সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

  • রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগস্ট ২০২৪-এর আগে ও পরে দায়ের হওয়া সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা পর্যালোচনা করে বাতিল করতে হবে।

  • দমনমূলক আইন বাতিল: ২০২৫ সালের ‘সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশ’সহ সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং ফৌজদারি আইনে মানহানির ধারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান অনুযায়ী বাতিল বা সংশোধন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সংস্থাগুলো প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, অল্প সময়ের এই অন্তর্বর্তী সময়ে এমন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যা স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে এবং ভবিষ্যতে পুনরায় কর্তৃত্ববাদী শাসনের ঝুঁকি প্রতিহত করবে।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator