চট্টগ্রাম। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরের অপসারণ দাবি করে ৮ ঘণ্টা ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। আন্দোলনকারীরা পটিয়া বাইপাস এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার রাতে। পটিয়া থানা পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দুই দফা সংঘর্ষ ঘটে। উভয় পক্ষ দাবি করে ১৯ জন আহত হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে থাকলেও পুলিশ বলেছে, মিছিলে ‘মব’ সৃষ্টির কারণে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। এর প্রতিবাদে আজ পটিয়া থানার সামনে থানা ঘেরাও ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, “ওসি জায়েদ নূর অপসারণ না হলে আমরা সড়ক ছাড়ব না।” তিনি ব initially ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঘোষণা করলেও পরে জানিয়েছে, ওসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান ত্যাগ করবে না।
অবরোধের কারণে মহাসড়কে যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পথচারী ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকেই দীর্ঘ সময় যানবাহনের বিকল্প হিসেবে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হন। এক বাসচালক জানান, সকাল ১১টা থেকে যানবাহনে আটকা পড়েছেন। তিনি পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন।
পটিয়া থানা ও আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওই নেতাকে রাত ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে আটক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। যদিও পুলিশ অভিযোগে মামলা না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করেনি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে আন্দোলনকারীরা আহত হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনের সীমার মধ্যে থেকে কাজ করেছে। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর First Alo-কে বলেছেন, “থানায় সাতজন রিমান্ডে থাকা আসামি ছিল। তারা ওই ব্যক্তিকে মারধর করে থানায় নিয়ে আসে এবং সেখানে চড়াও হয়।”
স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও, আন্দোলনকারীরা বলেন, “ওসির অপসারণ আদেশ আসা পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না।”
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দেশের অন্যতম ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটি কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ও পার্বত্য জেলা বান্দরবানের যাতায়াতের মূল পথ। সড়কটিতে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ১৮ হাজার গাড়ি চলাচল করে, যা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে অবরোধের কারণে।
বিক্ষোভে উত্তেজনা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে এলাকায় ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। প্রশাসনের কাছে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলে নেতারা জানিয়েছেন।