close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

৭৫ কোটি ডলারের গ্যাস বকেয়া কমে ২৪ কোটিতে: তিন বছরে সংকটে থাকা খাতের স্বস্তির ইঙ্গিত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিগত সরকারের রেখে যাওয়া বিপুল বকেয়া পরিশোধে তৎপর অন্তর্বর্তী সরকার; নিয়মিত বিল পরিশোধের ধারায় ফিরছে পেট্রোবাংলা, বাড়ছে সরবরাহ, কমছে আমদানির খরচ।

বাংলাদেশের গ্যাস খাতে তিন বছর ধরে জমে থাকা বিপ..

গত তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানিকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও স্থানীয় গ্যাস উৎপাদন খাতে পেট্রোবাংলার জমে থাকা বকেয়া বিল গ্যাস সরবরাহে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর চাপ, দরপত্রে অনাগ্রহ, এবং ডলারের সংকটের কারণে এই সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর গৃহীত পদক্ষেপে এ অবস্থার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, আগের সরকার আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ কোটি ডলারের বকেয়া ফেলে যায়। এরপর থেকে গ্যাসের আমদানি বাড়ালেও, অন্তর্বর্তী সরকার পুরনো বিল শোধে বিশেষ উদ্যোগ নেয়। গত দেড় মাসেই পরিশোধ করা হয়েছে ৪৭ কোটি ডলারের বেশি। শুধু ৭ থেকে ১৬ এপ্রিল—মাত্র ছয় কার্যদিবসে পরিশোধ হয় ১৮ কোটি ডলার।

এখন বকেয়ার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৪ কোটি ডলারে। এর মধ্যে এলএনজি আমদানির জন্য বকেয়া আছে ২২ কোটি ডলার—যার অর্ধেকই খোলাবাজার থেকে কেনা গ্যাসের। এলএনজি টার্মিনাল ব্যবহার বাবদ বকেয়া প্রায় এক কোটি ডলারের মতো।

বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের পাওনা পরিশোধ। দেশীয় উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ গ্যাস সরবরাহকারী এই কোম্পানিকে এখন কোনো বকেয়া নেই। ফলে সরবরাহে স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যতের দরপত্রে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "বিগত সরকার জ্বালানি খাতকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছিল। বিলম্বে বিল পরিশোধে খরচ বাড়ে, দরপত্রে উচ্চ দর আসে। এখন আমরা খরচ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি।"

গবেষণা সংস্থা সিপিডি'র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, "জ্বালানি খাতের বকেয়া কমার পাশাপাশি ডলারের রিজার্ভ স্থিতিশীল হচ্ছে, যা ইতিবাচক। তবে এখনই দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।"

অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক একযোগে ডলার ছাড়ের মাধ্যমে এই খাতে সহায়তা করেছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) মার্চে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে বড় ভূমিকা রাখে।

বকেয়া কমানোর ফলে দরপত্রে এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে আরও বেশি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিযোগিতা বাড়ায় এলএনজির দামও পড়ছে কম, যা পেট্রোবাংলার জন্য অর্থ সাশ্রয় এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে।


পেট্রোবাংলার নিয়মিত বিল পরিশোধ এবং পুরনো বকেয়া শোধের ফলে দেশের জ্বালানি খাতে স্বস্তির পরশ এসেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই উন্নতি টেকসই করতে হলে প্রয়োজন দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কৌশল। কেবল আমদানিনির্ভরতার ওপর ভরসা করলে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা এড়ানো কঠিন হতে পারে।

Nessun commento trovato