close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

৭০ লক্ষ টাকার কনসার্ট ফি—যে কন্যাকে জন্ম দিতে চায়নি মা, সেই নেহা কক্কর আজ বলিউডের গর্ব!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নেহা কক্করের জীবনের শুরুটা ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা—গর্ভাবস্থার আট সপ্তাহ পার হওয়ার পরও তাঁর মা-বাবা গর্ভপাতের চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্য আর ঈশ্বরের ইচ্ছায় সেই ভ্রূণই আজ বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়িক..

আজ তাঁর লাইভ কনসার্টের রেটকার্ড ৭০ লক্ষ টাকা। কিন্তু একসময় তাঁর জন্মই প্রায় অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল। হ্যাঁ, বলছি বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা নেহা কক্করের কথা। খুব কম মানুষ জানেন যে নেহার মা এক সময় গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর্থিক সংকটে জর্জরিত পরিবারটি ভাবতে শুরু করেছিল—এই সন্তানকে তারা কীভাবে বড় করবে? তখন গর্ভাবস্থার আট সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছিল, তাই চিকিৎসক জানিয়ে দেন, অ্যাবোরশন সম্ভব নয়। সেখান থেকেই শুরু নেহার জীবনের গল্প—যেখানে প্রতিটি অধ্যায় সংগ্রাম আর সাফল্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

 

নেহার দাদা টনি কক্করের শেয়ার করা এক ভিডিওতে উঠে এসেছে তাঁদের পরিবারের জীবনের কঠিন বাস্তবতা। শিরোনাম ছিল "কক্কর ফ্যামিলি স্টোরি"। সেখানে তিনি জানান, তাঁদের বাবা-মা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাতেন। একটা সময় এমনও এসেছে, যখন তাঁরা নিজেরাই বুঝতে পারছিলেন না ভবিষ্যতের সন্তানের দায়িত্ব নিতে পারবেন কি না। কিন্তু ঈশ্বর যেন অন্য কিছু ভেবেছিলেন। গর্ভাবস্থার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায়, শেষ পর্যন্ত তাঁরা সেই শিশুকে পৃথিবীতে আনতেই রাজি হন—আর সেই সন্তানই আজকের নেহা কক্কর।

পরিবারের ভালোবাসা ও সাহচর্য

নেহা বরাবরই পরিবারের খুব কাছের মানুষ। দাদা টনি ও দিদি সোনু কক্করের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গভীর ও আবেগপূর্ণ। ৩৫তম জন্মদিনে, টনি একটি আবেগঘন ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে তিনি জানান—নেহা তাঁদের জীবনের এক অভাবনীয় আশীর্বাদ। ছোট বোন হয়েও, নেহা জীবনের এক কঠিন পর্যায়ে ভাইবোনদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সাহায্য করতেন, অর্থ পাঠাতেন। মুম্বইতে থেকেও পরিবারের প্রতি দায়িত্ব ও ভালবাসায় কোনও খামতি রাখেননি।

সাফল্যের শিখরে পৌঁছানো

নেহার শৈশব কেটেছে হৃষিকেশে। খুব সাধারণ পরিবারে বড় হওয়া এই মেয়ে ছোট থেকেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গান গাইতেন। দিদি সোনুকে দেখেই গান শিখেছিলেন। পরে একটি সঙ্গীত রিয়েলিটি শো জেতার পর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। অল্প টাকার জন্য গান গাওয়া সেই মেয়ে আজ ৬৫ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। তিনি একেকটি স্টেজ শো বা কনসার্টে পারফর্মের জন্য নেন ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা।

অতীতের ঘর, আজকের বাংলো

টনি আবেগের সঙ্গে স্মৃতিচারণা করে জানান, একসময় তাঁরা একটি ছোট ঘরে থাকতেন, যেখানে তাঁদের মা একটি টেবিলে রান্না করতেন—সেই ছিল তাঁদের রান্নাঘর। সেই ঘরটিও তাঁদের নিজস্ব ছিল না, ভাড়ায় থাকতেন তাঁরা। আজ সেই শহরেই নেহার নিজস্ব বাংলো। সেই পুরনো বাড়ির পাশেই তাঁদের বর্তমান বাংলো। নেহা নিজেই বলেছেন—"আজ যখন ওই শহরে নিজের বাংলো দেখি, মনটা ভরে যায়। চোখে জল চলে আসে—কারণ আমি জানি আমি কোথা থেকে উঠে এসেছি।"

অনুপ্রেরণার প্রতীক

টনি কক্কর বলেন, “নেহা শুধু আমার ছোট বোন নয়, সে একটি অনুপ্রেরণা। ওর মত মেয়ে পরিবারে থাকলে, যেকোনও ঝড় সামলে ফেলা যায়।”

নেহা কক্করের জীবন কেবল একটি সাফল্যের গল্প নয়—এটি একটি স্বপ্নের সাক্ষ্য, যে স্বপ্ন বাস্তব হয় একনিষ্ঠতা, ভালোবাসা আর অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে।

Nessun commento trovato