close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

৭ কোটি ৮০ লাখ কর্মী দাবি জামায়াতের: রাজনৈতিক উত্তাপে নতুন মাত্রা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের দাবি—বাংলাদেশে জামায়াতের কর্মী সংখ্যা ৭ কোটি ৮০ লাখ! এমন দাবিকে ঘিরে তোলপাড় রাজনৈতিক অঙ্গন। এটি বাস্তব নাকি প্রচারণার কৌশল—উঠছে প্রশ্ন।..

৭ কোটি ৮০ লাখ কর্মী দাবি জামায়াতের: রাজনৈতিক উত্তাপে নতুন মাত্রা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা এবং সমালোচনার ঝড়।

তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে দাবি করেছেন, "আলহামদুলিল্লাহ, জামায়াতে ইসলামী এখন দেশের একটি শক্তিশালী ও জনভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন। নিয়মিত কর্মীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা প্রমাণ করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের প্রতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।"

পোস্টটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দলের কর্মী সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি। এই দাবিটি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাংবাদিক, ও সাধারণ জনগণের মাঝে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।


বিস্ময়, সংশয় ও কৌশলের গন্ধ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন পরিসংখ্যান প্রকাশ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে।
বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন দেশের রাজনীতি অনেকটাই অস্থির, সেই প্রেক্ষাপটে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এ ধরনের বক্তব্যকে মরাল বুস্টিং বার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে।

সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর মাহফুজুর রহমান বলেন, “৭ কোটি ৮০ লাখ কর্মীর তথ্যটি কতটা বাস্তবসম্মত—তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তবে এটি দলীয় কর্মীদের উদ্দীপিত করতে এবং রাজনৈতিক উপস্থিতি জোরালোভাবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।”


বিপরীত মত ও প্রশ্নবাণ

এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক ফোরামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ একে "অতিরঞ্জিত প্রচার" হিসেবে দেখছেন। অনেকে আবার বলছেন, যদি এই তথ্য সঠিক হয়, তবে দেশের রাজনীতিতে জামায়াতের ভূমিকা পূর্বাপেক্ষা আরও শক্তিশালী হবে।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটির মতো। সেই হিসেবে ৭ কোটি ৮০ লাখ কর্মী থাকলে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব দেশের অর্ধেক জনগণের সমর্থনের সমান হবে। যা বর্তমানে জাতীয় রাজনীতিতে কোনো দলের পক্ষেই দৃশ্যমান নয়।


পেছনের উদ্দেশ্য কী?

বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, জামায়াত নতুন করে নিজেদের সাংগঠনিক ভিত্তিকে সামনে তুলে ধরতে এবং রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পরও নিজেদের কার্যকারিতা প্রমাণে সচেষ্ট হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতও যেন নতুনভাবে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে জামায়াত বিভিন্ন জেলায় মিছিল, সভা-সমাবেশ এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সক্রিয় হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মাসুদের বক্তব্য দলের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বলেই বিবেচিত হচ্ছে।


ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে জামায়াত কোথায় দাঁড়াবে?

এই প্রশ্ন এখন অনেকের মনে। বর্তমানে দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম আদালতের নিষেধাজ্ঞায় সীমাবদ্ধ থাকলেও সমর্থকদের সংগঠিত রাখা এবং জনসম্পৃক্ততা বজায় রাখা তাদের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলের অংশ হতে পারে। মাসুদের ফেসবুক পোস্ট সেই কৌশলেরই একটি প্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জামায়াত কি এই বিস্ময়কর দাবি প্রমাণ করতে পারবে, নাকি এটি কেবল রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা—তা সময়ই বলবে।



৭ কোটি ৮০ লাখ কর্মীর দাবি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ রাজনীতির জন্য একটি বিস্ময়কর তথ্য। এটি বাস্তব হোক কিংবা রাজনৈতিক কৌশল—জামায়াতে ইসলামীর এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় বড়সড় স্থান করে নিয়েছে।

Ingen kommentarer fundet