জাতীয় রাজনীতিতে নিজস্ব অবস্থান আরও সুসংহত করতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। দলটি আগামী ২১ জুনের মধ্যে দেশের সব আসনে প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছে।
রোববার ঢাকার কাকরাইলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণে কঠোর মানদণ্ড
সভায় জানানো হয়, একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রার্থী নির্বাচন হবে সাংগঠনিক গ্রহণযোগ্যতা, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এবং মাঠপর্যায়ের সক্রিয়তা বিবেচনায়। নির্বাচনে ‘রিকশা’ প্রতীককে সামনে রেখেই তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রত্যাশিত প্রার্থীদের মাঠ পর্যায়ে কাজ, জনগণের সঙ্গে সংযোগ এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আলোচনা হয়।
দলটি মনে করে, এতোদিন প্রান্তিক জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করলেও, এবার সংগঠিতভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবে।
কারচুপিমুক্ত নির্বাচনের দাবি খেলাফত মজলিসের
দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “আমরা চাই প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক। তবে তা হতে হবে কারচুপি, কালো টাকা এবং পেশিশক্তিমুক্ত।”
তিনি বলেন, “জনগণ আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। ২০১৪, ২০১৮ এমনকি ২০২৪ সালের অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ পরিত্রাণ চায়। আমরা ১/১১-এর মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিও আর চাই না। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।”
মাওলানা জালালুদ্দীন আরও বলেন, “আমরা কোনো দল বা জোটের মুখাপেক্ষী নই। স্বাধীনভাবে ও নীতিনির্ভর রাজনীতি করছি এবং করবো। জনগণের স্বার্থেই আমরা ৩০০ আসনে রিকশা প্রতীকে মাঠে নামছি।”
বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের উপস্থিতি
সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন—
যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসনাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মাদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান প্রমুখ।
নতুন নির্বাচনী সমীকরণে খেলাফত মজলিসের উপস্থিতি কী বার্তা দেবে?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খেলাফত মজলিসের এমন একক প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনের নির্বাচনী সমীকরণে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। যদিও দলটি এখনও বড় দলগুলোর মতো প্রভাবশালী নয়, তবে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা এবং সংগঠিত প্রচারণা তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে দৃঢ় করবে।
বিশেষ করে, মাঠ পর্যায়ে ইসলামী রাজনীতির যে নিরব শক্তি রয়েছে, তা নির্বাচনের দিন কীভাবে প্রতিফলিত হবে, সেদিকে এখনই চোখ রাখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।