close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

৩ ঘণ্টার মধ্যেই পিছু হটতে বাধ্য হয় ভারত’

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পেহেলগাম হামলার পর টানা উত্তেজনার মধ্যে মাত্র ৩ ঘণ্টায় ভারতকে পিছু হটতে বাধ্য করেছিল পাকিস্তান—এমন বিস্ফোরক দাবি করলেন সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী। কী ঘটেছিল সেই রাতে? মিললো চাঞ্চল্যকর তথ্য!..

মাত্র ৩ ঘণ্টায় ভারতকে পিছু হটার দাবি পাকিস্তানের, মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বিস্ফোরক বিবরণ

পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর টানা ১৯ দিনের উত্তেজনার পরিণতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি। এর পরিণতি হয় ভয়াবহ, যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। অবশেষে মার্কিন মধ্যস্থতায় ১০ মে সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। তবে পরিস্থিতি থেমে থাকেনি। এবার সেই সংঘর্ষ নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ।

১৬ মে, করাচিতে সিন্ধু পরিষদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “১০ মে রাতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’ শুরু করেছিল। অভিযান শুরুর মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই ভারত পিছু হটতে বাধ্য হয়।”

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের এই অভিযানে ভারতীয় ২৬টি সামরিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানা হয়। অভিযানের শুরুতেই আন্তর্জাতিকভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তৎক্ষণাৎ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে ফোন করেন। এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ভারত যুদ্ধবিরতিতে রাজি।

৮৫টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস, দাবি মুরাদের

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “৮ মে ভারতীয় ড্রোন হামলায় সিন্ধু প্রদেশে প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরপর মাত্র দুই দিনেই আমরা ৮৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করি।”

এই তথ্য জানাজানি হতেই পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার এমন বর্ণনা আগেও শোনা গেছে, তবে এইভাবে এক উচ্চপদস্থ প্রশাসকের মুখে এত বিশদ বিবরণ এই প্রথম।

ঘটনার পেছনের পটভূমি

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। ভারত এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও ইসলামাবাদ শুরু থেকেই জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানায়।

এ ঘটনার পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ৬ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নাম দিয়ে ভারত আজাদ কাশ্মিরে ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ১০ মে ভোররাতে ফের পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। এরই জবাবে পাকিস্তান শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’। এই অভিযানে ফাতাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তান ভারতের অন্তত ১১টি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।

মার্কিন হস্তক্ষেপে থেমে যায় সংঘর্ষ

চরম উত্তেজনার মধ্যেই বিকেল ৪টার দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, “ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।”

তার এই ঘোষণার পর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সাধারণ মানুষ। আন্তর্জাতিক মহলও এই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়।

বিশ্লেষকদের মতামত

যদিও উভয় পক্ষই এই সংঘর্ষে জয়ী হওয়ার দাবি করছে, তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে ভারত কার্যত মুখ রক্ষা করলো। কারণ একদিকে আন্তর্জাতিক চাপ, অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা আগ্রাসনের মুখে খুব দ্রুতই পিছু হটার কৌশল নেয় দিল্লি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই যুদ্ধবিরতি কূটনৈতিকভাবে মোদী সরকারের জন্য একটি পরাজয় বলেই প্রতীয়মান হয়, যদিও তারা একে বিজয় হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।”

শেষকথা

ভারত-পাকিস্তানের এই সাম্প্রতিক সংঘর্ষ আবারো প্রমাণ করলো, পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যেকোনো সামান্য উত্তেজনা সহজেই বিপজ্জনক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহের বক্তব্য পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি বড় কূটনৈতিক বার্তা বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে সত্যতা যাচাই এখন সময়ের দাবি।

এখন দেখার বিষয়, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার স্থায়ী সমাধান আদৌ কোনো কূটনৈতিক পথে আসবে কি না, নাকি ভবিষ্যতেও এমন সংঘর্ষ বারবার ফিরে আসবে!

 
No comments found