গোয়াইনঘাটে নৌকাডুবিতে নিখোঁজের একদিন পর উদ্ধার হলো বিজিবি সদস্য মাসুম বিল্লাহর লাশ। ভারতীয় পণ্যবাহী নৌকা থামানোর চেষ্টা করতে গিয়েই ঘটে এই দুর্ঘটনা।
সিলেটের গোয়াইনঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় একদিন ধরে নিখোঁজ থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মাসুম বিল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সকালে সদর ইউনিয়নের আহারকান্দি আমবাড়ি এলাকার ইছামতী নদী থেকে স্থানীয় ডুবুরিরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন।
নিহত মাসুম বিল্লাহ সোনারহাট বিওপি ক্যাম্পে সিপাহি পদে কর্মরত ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই সদস্যের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মীরা তাঁকে দায়িত্বশীল, সাহসী ও কর্মনিষ্ঠ একজন সৈনিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলার সদর ও পশ্চিম জাফলং এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া পন্নগ্রাম ও আমবাড়ীর মাঝামাঝি স্থানে দুইজন বিজিবি সদস্য নৌকাযোগে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় ভারতীয় পণ্যবাহী একটি নৌকাকে থামানোর চেষ্টা করলে ধাক্কা লাগে। ধাক্কার ফলে উভয় নৌকা উল্টে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়।
নৌকায় থাকা অন্য বিজিবি সদস্য ও মাঝি সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও সিপাহি মাসুম বিল্লাহ পানির স্রোতে তলিয়ে যান। তৎক্ষণাৎ সিলেট ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ডুবুরি ও বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালালেও প্রথম দিন তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অবশেষে নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর রোববার সকালে স্থানীয় ডুবুরিরা তাঁর লাশ ইছামতী নদীর গভীর থেকে উদ্ধার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, “আমাদের সদস্য সিপাহি মাসুম বিল্লাহকে হারানো অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
এ ঘটনায় বিজিবি ও স্থানীয়রা শোক প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, নদীতে টহল কার্যক্রমে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ আরও বাড়ানো দরকার, যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
গ্রামের মানুষ জানান, মাসুম বিল্লাহ ছিলেন শান্ত স্বভাবের ও সকলের প্রিয়। তাঁর অকাল মৃত্যু শুধু পরিবার নয়, পুরো এলাকায় এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি করেছে।