ইসরাইলের নেসেট স্পিকার আমির ওহানা ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিতে বিশ্বজুড়ে সংসদীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা হবে।
ইসরাইল ঘোষণা করেছে যে ২০২৬ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে তারা বিশ্বজুড়ে সংসদীয় নেতাদের একত্র করবে। এই ঘোষণা আসে নোবেলজয়ী ভেনেজুয়েলার নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোর পুরস্কার জয়ের কয়েকদিন পরই।
ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটের স্পিকার আমির ওহানা জানান, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। সেই জন্যই তিনি বিশ্বাস করেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্প সর্বোচ্চ স্বীকৃতির যোগ্য।
নেসেটের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে ওহানা বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আপনি শান্তির প্রেসিডেন্ট। এই পৃথিবীতে এমন আর কোনো মানুষ নেই যিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় আপনার মতো প্রভাব রেখেছেন। কেউই আপনার কাছাকাছি আসতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “আপনার নির্বাচিত হওয়া কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। আপনি অটল সংকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের কমপক্ষে আটটি অঞ্চলে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন। মাত্র নয় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আপনি ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী প্রেসিডেন্টে পরিণত হয়েছেন।”
স্পিকার ওহানা বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনা আরও জোরদার হয়েছে। তার ভাষায়, “শান্তির উদ্যোগে যে সাহসিকতা, দৃঢ়তা এবং কূটনৈতিক দক্ষতা ট্রাম্প দেখিয়েছেন, তা আধুনিক ইতিহাসে বিরল।”
ওহানা আরও ঘোষণা করেন, “আমরা আগামী বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রার্থীতা আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেব। আমি নিজে এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার মাইক জনসন একসাথে বিশ্বজুড়ে সংসদীয় স্পিকারদের ঐক্যবদ্ধ করব, যাতে তারা এই মনোনয়নকে সমর্থন জানায়।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের এই উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে নতুন অধ্যায় সূচিত করতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি কেবল ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনকেই জোরদার করবে না, বরং মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্ককেও আরও দৃঢ় করবে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও নীতিগুলো শান্তির চেয়ে বরং বিভাজনই বাড়িয়েছে। তবু ইসরাইলের এই ঘোষণাকে অনেকেই “রাজনৈতিক কৌশল ও কূটনৈতিক বার্তা” হিসেবে দেখছেন।
২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার এখনো মাস কয়েক বাকি থাকলেও, ইসরাইলের এই আগাম পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে বলছেন, যদি সত্যিই ট্রাম্প নোবেল পান, তবে তা হবে এক যুগান্তকারী ঘটনা — যেখানে রাজনীতি ও শান্তির সংজ্ঞা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হবে।