close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

১৭ বছর পর ‘রাজনীতি ও ইতিহাসের মঞ্চে’ প্রত্যাবর্তন: ঢাকায় পা রাখলেন জোবাইদা রহমান!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফিরলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ও বিএনপি নেত্রী জোবাইদা রহমান। লন্ডন থেকে ফিরেই ধানমন্ডির মাহবুব ভবনে উঠছেন তিনি। নতুন রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াতে পারে এই প্রত্যাবর্তন—বিশ্লে..

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাংলাদেশে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। এই প্রত্যাবর্তন শুধু পারিবারিক পুনর্মিলন নয়, বরং রাজনীতির আঙিনায় এক নতুন অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মামলার প্রেক্ষিতে তারেক রহমান ও স্ত্রী জোবাইদা রহমান দেশত্যাগ করেন। এরপর কেটে গেছে পুরো ১৭টি বছর। লন্ডনে ছিলেন তারা একমাত্র কন্যা জায়মা রহমানকে নিয়ে। চিকিৎসা, পারিবারিক জীবন এবং নীরব রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণে কেটেছে সময়।

আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে কাতারের আমিরের একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানেই ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার পুত্রবধূ সৈয়দা শর্মিলা রহমান এবং দীর্ঘদিন পরে দেশে ফেরা জোবাইদা রহমান।

ফেরার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। কারণ, ২০২৩ সালে ঢাকার একটি আদালত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলায় জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের’ প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে গেলে, আদালত ওই সাজা স্থগিত করে।

জানা গেছে, দেশে ফেরার পর তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির ‘মাহবুব ভবনে’ উঠবেন। এটি তার প্রয়াত পিতা, সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের পৈতৃক বাড়ি। সেখানে তার অসুস্থ মা থাকেন, যার সাথেই প্রাথমিকভাবে সময় কাটাবেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাহবুব ভবনে ইতোমধ্যে তার জন্য সংবর্ধনার প্রস্তুতিও চলছে।

জোবাইদা রহমান একজন চিকিৎসক হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাসের পর। ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসসি সম্পন্ন করেন। তবে ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটিতে লন্ডনে যাওয়ার পর আর চাকরিতে ফেরেননি। দ্বিতীয় মেয়াদে ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ না দেওয়ায় তাকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

তার পারিবারিক পরিচয়ও দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তার পিতা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান জিয়াউর রহমান সরকারের সময় নৌবাহিনী প্রধান ছিলেন এবং এরশাদ সরকারের সময় যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। আর স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী ছিলেন জোবাইদার চাচা।

১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জোবাইদা। সে সময় এই বিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে আলোচনার ঝড় তুলেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বিএনপির ভেতরে সম্ভাব্য নেতৃত্ব পুনর্বিন্যাস এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণে নতুন মাত্রা যুক্ত হতে পারে। বিশেষ করে, তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জোবাইদা রহমানকে সামনে এনে এক নতুন রাজনৈতিক কৌশলের সূচনা করতে পারে বিএনপি।

সামনে জাতীয় নির্বাচন, নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ, এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব প্রশ্নে জোবাইদার প্রত্যাবর্তন হতে পারে যুগান্তকারী এক অধ্যায়ের সূচনা।

没有找到评论