মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেননি, বরং পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। অভিযুক্তদের পাঠানো হয়েছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের সাবজেলে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলায় অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেননি, বরং পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। আজ বুধবার সকালে ১৫ জন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর শুনানিতে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি উল্লেখ করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ঢাকার রামপুরায় একটি হত্যা ও দুটি গুমের ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত এই সেনা কর্মকর্তারা। ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তীতে এই কর্মকর্তাদের ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে অবস্থিত সাবজেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার ওই কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করে। এরপর আজ বুধবার কারা কর্তৃপক্ষ তাদের প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে। এই প্রেক্ষাপটে, চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বক্তব্য আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, কারণ তাদের আত্মসমর্পণের দাবি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অবশ্য ভিন্ন দাবি করেছেন। শুনানি শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, সেনা সদরদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওই ১৫ কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, আসল অপরাধীরা ভারতে পালিয়ে গেছে এবং তাঁর মক্কেলরা নির্দোষ। তিনি বলেন, এই কর্মকর্তারা সিনিয়র ও অভিজ্ঞ—যাদের অনেকেই আন্তর্জাতিক মিশনে কাজ করেছেন এবং তাঁরা সবাই এই আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ জুলাই অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি করে। এই তিনটি মামলায় অভিযুক্ত বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং র্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক রয়েছেন। দুটি গুম মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকও। গত ৮ অক্টোবর অভিযোগপত্র গ্রহণের পর ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন এবং তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন পুলিশ মহাপরিদর্শককে।