প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের গত সাড়ে পনেরো মাসের অর্জন তুলে ধরেছেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি সেইসব সমালোচকদের জবাব দিয়েছেন, যারা এই প্রশাসনকে ‘দুর্বল’, ‘নবীন ও অদক্ষ’, কিংবা ‘মাখন-খাওয়া দল’ বলে ব্যঙ্গ করেছেন। প্রেস সচিব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন, এটি গত বহু দশকের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সরকারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তিনি বলেন, এই সরকার প্রায় সবকিছুই অর্জন করেছে, যা করার লক্ষ্য নিয়ে তারা ক্ষমতায় এসেছিল। সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে শাসন এবং আইনি কাঠামোর সংস্কারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা শেষে এই সরকারের আমলে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক হামলা বন্ধ হয়েছে।
সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। গুমের মতো ঘটনা চিরতরে বন্ধ হয়েছে। বহু বছর ধরে দেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চরমপন্থি রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিষ্ক্রিয় হয়েছে। র্যাব এখন অনানুষ্ঠানিক নীতিতে নয়, বরং আইনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভিন্নমতাবলম্বীদের হয়রানি থেকে সরে এসেছে।
প্রেস সচিব জোর দিয়ে বলেন, গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুরোপুরি ফিরে এসেছে। গত ১৬ মাসে একটি সাজানো ‘ক্রসফায়ার’ ঘটনারও খবর পাওয়া যায়নি, যা প্রশাসনের নিরপেক্ষতার প্রমাণ। তিনি আরও জানান, আদালতের মাধ্যমে অতীত অপব্যবহারের জবাবদিহি শুরু হয়েছে এবং বহু প্রতীক্ষিত ন্যায়বোধের উন্মোচন হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা বা জামিন–বিষয়ক সিদ্ধান্তকে আর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না।
শফিকুল আলম তার পোস্টে যোগ করেন, এত কম সময়ে এত বড় আকারের সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়নি।



















