close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

১২ পারমাণবিক বো মা তৈরি করতে পারে ই রা ন , আইএইএ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদের দিক থেকে ইরান এখন ১২টি বোমা তৈরির সক্ষম। যদিও এখনো বোমা তৈরি হয়নি, বিশ্ব শক্তিগুলোর দুশ্চিন্তা বেড়েছে বহুগুণ।..

বিশ্ব রাজনীতিতে ফের উদ্বেগ ছড়াল ইরান। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানাল, ইরানের কাছে এখন প্রায় ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরির মতো সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। যদিও তারা এখনও কোনো বোমা তৈরি করেনি, তবুও এই তথ্য গোটা বিশ্বে উদ্বেগের বার্তা ছড়িয়েছে।

IAEA-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেন, “ইরান এখন যে মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তা অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে।” তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি।

গ্রোসি বলেন, ফোরদো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে সেন্ট্রিফিউজগুলো অকেজো হয়েছে। তবে অন্য কেন্দ্রগুলো এখনো সচল এবং কার্যকর রয়েছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস হয়ে গেছে—এমন ধারণা ভুল।

রাফায়েল গ্রোসি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরান এখন IAEA-এর নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট উত্তেজনার মধ্যে আছি। ইরান আমাদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না, এবং তারা আমাদের স্বাধীনতাকেও চ্যালেঞ্জ করছে।”

সম্প্রতি ইরানের পার্লামেন্ট একটি বিল পাস করেছে, যা IAEA-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার সুযোগ তৈরি করেছে। এখন সেই বিল গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যদি এটি চূড়ান্ত হয়, তাহলে সংস্থার পরিদর্শনের জন্য ইরানের ‘সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল’-এর অনুমোদন বাধ্যতামূলক হয়ে পড়বে—যা সংস্থাটির কাজকে অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ইরান কেবলমাত্র ৩.৬৭% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত। কিন্তু এখন তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের একেবারে কাছাকাছি।
এমন সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদের অর্থ, ইরান চাইলে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে।

IAEA আগেই জানিয়েছিল, ইরান চুক্তির একাধিক শর্ত লঙ্ঘন করেছে এবং প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণে সহযোগিতা করছে না। সেই প্রেক্ষাপটে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারে। সৌদি আরব, ইসরায়েল এবং অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর উদ্বেগ দ্রুতই বাড়ছে। তেল নির্ভর অর্থনীতি ও ভূ-রাজনীতির পটভূমিতে এমন একটি পরিস্থিতি গোটা বিশ্বের জন্যই অশনি সংকেত।

ইরান যদি সত্যিই ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন করে, তবে তা শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং চাপ প্রয়োগ কতটা কার্যকর হয় এই পরিস্থিতি মোকাবেলায়।

Nema komentara