ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি আবারও আলোচনায়। পর্দার নায়িকা হিসেবে যেমন তিনি দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন, তেমনি ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও বরাবরই ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন, প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ—সবকিছু নিয়েই তিনি শিরোনামে এসেছেন বারবার। আর এবার আলোচনার বিষয় মাতৃত্ব।
বর্তমানে স্বামী শরিফুল রাজের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি একাই বড় করছেন নিজের পুত্র সন্তান পুণ্যকে (পদ্ম)। শুধু তাই নয়, মাতৃত্বের দায়িত্ব আরও বিস্তৃত করেছেন একটি কন্যাশিশু দত্তক নিয়ে। গত বছর প্রিয়ম নামের সেই কন্যাশিশুকে নিজের মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করে পরীমণি যেন জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন।
সম্প্রতি এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে নিজের মাতৃত্ব এবং জীবনের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে অকপটে কথা বলেন তিনি। জানান, এক সময় তিনি যেভাবে হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতেন, এখন আর তেমনটি করেন না। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখন তিনি অনেক চিন্তাভাবনা করে পদক্ষেপ নেন। এমনকি শুরু করেছেন নিয়মিত সঞ্চয়ও, যেন সন্তানদের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা যায়।
আড্ডার এক পর্যায়ে মজার ছলেই উঠে আসে তার জীবনের একটি ব্যতিক্রমী ইচ্ছে। হাসিমুখে তিনি বলেন, “আমি এখন পুণ্য আর প্রিয়মের মা। তবে চাইলে আরও ৯৮টি সন্তানের মা হতে পারি। মোট ১০০ সন্তানকে লালন-পালন করে মানুষ বানানোর স্বপ্ন দেখি। আল্লাহ চাইলে নিশ্চয়ই আমাকে সে সামর্থ্য দেবেন। কারণ এই সময়ে সন্তানদের মানুষ করার জন্য প্রচুর অর্থের দরকার।
এই বক্তব্য হয়তো অনেকের কাছে মজা মনে হতে পারে, কিন্তু পরীমণির কণ্ঠে এর পেছনে ছিল গভীর মাতৃত্ববোধের প্রতিফলন। তিনি মনে করেন, মা হওয়া তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তার ভাষায়, “নায়িকা পরীমণি হয়তো অনেক জায়গায় ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু মা হিসেবে আমি কখনো ব্যর্থ হতে চাই না।
পরীমণির এই বক্তব্যে স্পষ্ট, তার কাছে মাতৃত্ব কেবল একটি ভূমিকা নয়, এটি জীবনের প্রকৃত সাফল্য। চলচ্চিত্রের গ্ল্যামার, আলো-ঝলমলে জীবন পেছনে ফেলে তিনি আজ নিজের সন্তানদের জন্য এক নিবেদিত প্রাণ মা। সমাজে যেখানে সন্তান পালন প্রায়ই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়, সেখানে পরীমণির এই বক্তব্য এক নতুন আলো ছড়িয়েছে।
তিনি প্রমাণ করেছেন, মাতৃত্ব কেবল রক্তের সম্পর্ক নয়; ভালোবাসা, যত্ন আর দায়িত্বের মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আসল মা। হয়তো ১০০ সন্তানের মা হওয়া আপাতদৃষ্টিতে কল্পনাপ্রসূত, কিন্তু এর মধ্য দিয়ে তিনি তুলে ধরেছেন এক মায়ের সীমাহীন ভালোবাসা এবং ত্যাগের চিত্র।
পরীমণির এই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত যে, মাতৃত্বকে তিনি যেভাবে জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছেন, তা তাকে আলাদা করেছে অন্যদের থেকে। এবং এই পথেই তিনি খুঁজে পাচ্ছেন নিজের জীবনের সত্যিকারের পরিচয় — একজন নিবেদিতপ্রাণ মা হিসেবে।