close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে রা জ নৈ তি ক দলগুলোর মতপার্থক্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় ঐকমত্য আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদে মতভেদ। দুইবার সীমাবদ্ধতা চায় অধিকাংশ দল, অন্যরা চায় গ্যাপ দিয়ে বারবার সুযোগ। উত্তপ্ত হয়েছে রাজনৈতিক মঞ্চ।..

বাংলাদেশে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে চলমান আলোচনা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যেখানে প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ মেয়াদ দুইবারে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে কিছু দল গ্যাপ দিয়ে বারবার নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে গভীর মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে।

দুই দিনের বিরতির পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রবিবার শুরু হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা। আলোচনার সূচনায় উঠে আসে ‘প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ মেয়াদ’ সংক্রান্ত প্রস্তাব। বিষয়টি ঘিরে শুরু থেকেই অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রুদ্ধ করে সংস্কার করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রের কোনো একটি অংশকে দুর্বল করে ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব নয়। আমরা দুই মেয়াদের কথা বলি, তবে সেটি নিয়ে আলোচনা দরকার।

তিনি আরো বলেন,একজন স্বৈরশাসক ছিলেন বলে আমরা যদি ভবিষ্যতের নেতৃত্বকে হাত-পা বেঁধে দিই, তাহলে সেটিও ঠিক হবে না। বরং প্রধানমন্ত্রী কত বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, সেটা উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করাই যুক্তিযুক্ত।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিষয়টিকে একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন,বার বা টার্ম নয়, একজন ব্যক্তি তাঁর পুরো জীবনে সর্বোচ্চ দশ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। বিশ্বের অনেক দেশে এ রকম বিধান রয়েছে, এবং আমরা মনে করি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এটি জরুরি।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন,একজন ব্যক্তি পরপর দুইবার প্রধানমন্ত্রী হবেন, এরপর একবার বিরতি দিয়ে আবার দুবার হবেন, তারপর আবার বিরতি দিয়ে আবার দুবার হবেন—এভাবে যতবার খুশি ততবার হবেন।

তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচিত হয়ে ওঠে। অনেকেই এটিকে একটি গোপনীয় স্বার্থের ইঙ্গিত বলেও উল্লেখ করছেন।

আমজনতা দলের নেত্রী সাধনা মহল বলেন,একজন ব্যক্তি দুইবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন, এরপর গ্যাপ দিয়ে আবার সুযোগ পাবেন। এটিকে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ হিসেবেই দেখছি।

ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন,জাতীয় ঐকমত্য গঠনের স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ দুইবারের পক্ষেই। তবে সংকটের মূল জায়গা হচ্ছে সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি।

এই বিষয়ে বামপন্থী দলগুলোর অবস্থান ছিল তুলনামূলকভাবে সুসংহত। বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন,মেয়াদ সম্পূর্ণ না করা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমরা প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ দুই মেয়াদকেই বিবেচনায় রাখতে চাই। এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বাস্থ্য বজায় রাখবে।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানও প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ সীমাবদ্ধতার পক্ষে সাফ বক্তব্য দেন।আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদের সীমা থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাগুলো ঘিরে দেশজুড়ে চলছে নানা ধরনের গুঞ্জন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সংক্রান্ত এই মতপার্থক্য ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কাঠামো কেমন হবে—তা নিয়ে বড় ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান এই ইস্যুতে কী হয়, সেটিই নির্ধারণ করবে আলোচনার ভবিষ্যৎ গতি। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে উপনীত হতে পারে কিনা রাজনৈতিক মহল।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator