বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ এবং ভোট চুরির অভিযোগ এনেছেন।
ভারতের বিহার রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার মুজাফফরপুরের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্রভাবে নিশানা করে রাহুল বলেন, মোদি কেবল আপনাদের ভোট চান। ভোটে জেতার জন্য আপনারা যদি তাকে নাটক করতে বলেন, সেটাও তিনি করে দেবেন। রাহুল কটাক্ষ করে বলেন, আপনারা যদি মোদিকে মঞ্চে এসে নাচ করতে বলেন, তিনি নেচেও দেবেন। তবে ভোটের আগে তাকে দিয়ে যেটা করতে মন চায়, সেটাই করুন, ভোটের পরে তাকে আর পাওয়া যাবে না।
রাহুল গান্ধী সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট চুরির গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, তারা (বিজেপি) আপনাদের ভোট চুরি করতে ময়দানে নেমেছে। রাহুল অভিযোগ করেন, বিজেপি মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানাতেও ভোট চুরি করেছিল, আর এবার বিহারেও সর্বস্ব দিয়ে সেই চেষ্টা করবে।
সম্প্রতি বিহারীদের প্রধান উৎসব ছট পূজা শেষ হয়েছে। এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী দিল্লির যমুনা নদীর পাশে একটি অস্থায়ী সুইমিং পুলে গোসল করেছিলেন বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে আসে। সেই ঘটনা নিয়েও রাহুল মোদিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তার মতে, ছট পূজায় ভক্তরা যেখানে দিল্লির দূষিত যমুনা নদীতে ডুব দিয়ে প্রার্থনা করেছেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে তৈরি একটি পুকুরে গোসল করে পুরোটাই নাটক করেছেন। রাহুল দাবি করেন, মোদি বলেছিলেন যে, তিনি যমুনা নদীতে গোসল করছেন, কিন্তু ওখানে কোনো যমুনা নদী ছিল না, ছিল একটি পুকুর। মোদিজির সঙ্গে ছট পূজা বা যমুনা নদীর কোনো সম্পর্ক নেই, তার কেবল ভোট প্রয়োজন।
নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক রেকর্ড উল্লেখ করে রাহুল দাবি করেন, নোট বাতিল এবং জিএসটি-র মাধ্যমে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ছোট ব্যবসা ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, "আপনাদের মোবাইল ফোনের পিছনে কী লেখা আছে বলুন তো? মেড ইন চায়না। কিন্তু এটা মেড ইন চায়না নয়, এটা মেড ইন বিহার হওয়া উচিত ছিল।" রাহুল দাবি করেন, মোবাইল, শার্ট, প্যান্ট—সবকিছুই বিহারে তৈরি করা উচিত, যাতে স্থানীয় যুবকরা চাকরি পায়।
রাহুল যখন মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন, তখন তার পাশেই উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা এবং বিরোধী মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। এদিকে, রাহুলের মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারির মতে, রাহুলের মন্তব্য একজন স্থানীয় গুন্ডার মতো এবং এর মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দেওয়া দরিদ্র মানুষ এবং বিহারবাসীদের প্রকাশ্যে অপমান করেছেন। তিনি ভোটার ও ভারতীয় গণতন্ত্রকে উপহাস করেছেন বলেও দাবি করেন ভান্ডারি।
বিহারের ২৪৩ বিধানসভা আসনের জন্য আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর দুই দফায় ভোট নেওয়া হবে এবং গণনা হবে আগামী ১৪ নভেম্বর। এই নির্বাচনে প্রধান লড়াই হবে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট এবং বিরোধী দলগুলোর মহাজোটের মধ্যে।



















