স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনীত ডাঃ কামরুল ইসলাম !
দরিদ্র জনতার চিকিৎসক কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ কামরুল ইসলাম । এ বছর ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরঃস্কার এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। দেশের একজন নিবেদিত জনবান্ধব চিকিৎসক হিসেবে আমরা কয়জন এই রিয়েল লাইফ সেলিব্রিটি বাংলাদেশী চিকিৎসককে চিনি ?
যিনি কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই করেন কিডনি প্রতিস্থাপন । গত ১৪ বছরে প্রায় ১০০০ কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। গাড়ি না কিনে সেই গাড়ি কেনার টাকায় স্থাপন করেছিলেন বিশেষায়িত হাসপাতাল শ্যামলী সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজি হাসপাতাল (সিকেডি)। হাসপাতালের নির্ধারিত নুন্যতম খরচ বাদে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য কোন ফি নেন না অধ্যাপক কামরুল। ১০-১৫ লাখ টাকার ব্যয়বহুল কিডনি প্রতিস্থাপন চিকিৎসাকে অধ্যাপক কামরুল সাধারণ মানুষের জন্য আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকার মধ্যে নিয়ে এসেছেন।
প্রফেসর ডা. মো. কামরুল ইসলাম রিপন। চিকিৎসাবিদ্যায় অসামান্য অবদান রাখায় তিনি এই পদকে ভূষিত হলেন। এরপূর্বে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখায় ইউরোলজি সোসাইটি কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৯০ সালে স্বর্ণপদক সহ এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করা প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে এমএস এবং ২০০৩ সালে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে এসএসসিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে মেধাতালিকায় ১৫-তম এবং মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে তিনি আলোচিত হন।
১৯৯৩ সালে স্বাস্থ্য বিভাগে যোগ দেয়া ডা. কামরুল ইসলাম কর্মজীবনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিসেজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপাচার এবং ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেশব্যাপী আলোচিত হন। ২০০৭ থেকে অদ্যাবদী পর্যন্ত তাঁর সফল কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা ১ হাজারের অধিক। এ সকল কিডনি প্রতিস্থাপন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি বিনামূল্যে।
২০১১ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং ২০১৪ সালে ঢাকার শ্যামলীতে প্রতিষ্ঠা করেন "সিকেডি ও ইউরোলজি হাসপাতাল"। প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলামের পিতা মো. আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ছিলেন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার কারণে বিহারিদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন।
পাবনার এই কৃতীসন্তান ও বাংলাদেশের অহংকার প্রফেসর ডা. মো. কামরুল ইসলামের দীর্ঘজীবন, কর্মজীবনের উত্তরোত্তর সফলতা এবং আমৃত্যু সুস্থতা কামনা করি। আপনার জন্য রইলো ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা - আপনি বেঁচে থাকুন অধ্যাপক কামরুল বীর বাংগালীর ভালোবাসায় ।