Soyed Rakibuzzaman Roky
প্রকাশ ১০/০৩/২০২২ ০৮:৩৭পি এম

দেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: নানক

দেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: নানক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, মুজিববিহীন বাংলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাওয়ার পথেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপির ভালো না লাগার বেরামে পেয়েছে। দেশকে পিছিয়ে নিতে চায় তারা। কাজেই আপনাদের সবসময় চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় খুনি মোশতাকের সহায়তাকারী জিয়াউর রহমান ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আমাদের বাজাতে দেয়নি দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জেনারেল এরশাদ, খালেদা জিয়ারা বাজার থেকে ভাষণটি নিষিদ্ধ করে উঠিয়ে দিয়েছিলো, কারণ এই ভাষণকে তারা ভয় পায়। এতেই বুঝা যায় বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের কি কৌশল হবে তা দিয়ে গিয়েছিলেন। এ ভাষণের মাত্র ১৮ দিনের ব্যবধানে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। সে ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু পারেনি।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বুকে ধারণের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, এ ভাষণটি কি অপূর্ব কি অকল্পনীয়। তা আমরা লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই। ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু যে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুকে যেন কেউ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে অভিহিত করতে না পারে সে দিকে তার সজাগ দৃষ্টি ছিলো।

তিনি ছাত্র সমাজের উদ্দেশ্যে নানক বলেন, একটি কুচক্রীমহল দেশকে যেভাবে অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তোমাদের সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। তাদের সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে বীর বাঙালি যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধীরা সব সময়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী খাদ্য মজুদ করে অস্থিতিশীল করতে চায়। বিএনপি, জামায়াতের এক শ্রেণি ব্যবসায়ীদের উস্কে দিতে চায়। বিএনপির স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য এক শ্রেণির ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্য মজুদ করে মূল্য বৃদ্ধি করে মুনাফা লুটার চেষ্টা করে। দেশপ্রেমী ব্যবসায়ী ভাইদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, আপনারা দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে সজাগ থাকবেন। সরকার সজাগ থাকবে, বাজার মনিটরিং করবে ছাত্রলীগের কাছে আহ্বান এ বিষয়ে সর্তক থাকার।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই ভাষণের দিকনির্দেশনাই ছিল সে সময় বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র। বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে দেওয়া ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের ইতিহাস, ভূগোল, মানচিত্র পাল্টে দিয়েছিল। তাই এই ভাষণ আজ বিশ্বের সম্পদ। জাতির পিতার এই ভাষন প্রায় ছিল ১৯ মিনিটের মতো। এই ভাষণটি সারা বিশ্বে প্রত্যেক রাষ্ট্রনায়করা প্রশংসা করেছে। এই ভাষনের অংশ হিসেবে আজকে আমরা এই লাল সবুজের বাংলাদেশ পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বীজ বপন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে তার আদর্শ ততদিন থাকবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এগিয়ে যাবে। সবাইকে একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ হয় কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রী লেখক ভট্রাচার্য বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে সেরা রাজনৈতিক ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের অনন্য সাধারণ ভাষণটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। পৃথিবীর অন্য সব সাড়া জাগানো ভাষণ ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কোন প্রকার লিখিত নোটস ছাড়াই যেন রাজনীতির এক কবিতা পাঠ করেছিলেন সেদিন। তার ঐতিহাসিক বক্তব্য শুনে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং আমরা অর্জন করি লাল সবুজের পতাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাণ। তার আদর্শে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তৎপরতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো: ইব্রাহিম ফরাজীর সভাপতিত্বে এবং ও শাখা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব বি এম মোজাম্মেল হক,আইন সম্পাদক অ্যাড. কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ