নাটোরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে আ'লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যায় নাটোর সার্কিট হাউসে কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার উপস্থিতিতে জেলার বিবদমান এমপি শিমুল ও চেয়ারম্যান রমজান গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত সাতজনকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ও অন্যদের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় এক বছর থেকে নাটোরে সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিপক্ষে অবস্থান নেয় জেলার বাকী চার এমপি ও মন্ত্রী। দলের কাউন্সিল অধিবেশন উপলক্ষে নানা তৎপরতায় এই বিরোধ আরও জোরদার হয়ে ওঠে। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শেষে শনিবার বিকালে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা নাটোর সার্কিট হাউসে চলে আসেন। নাটোরের বিবাদমান দুই গ্রুপ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানের শত শত অনুসারী এসময় সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে নিজেদের শক্তি জানান দিতে জেলা আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার অনুসারীরা ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড প্রদর্শন করে মিছিল করতে থাকে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি সার্কিট হাউসে পৌঁছলে উভয় গ্রুপ পালটাপালটি মিছিল শুরু করে। একপর্যায়ে তা ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়। উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে সার্কিট হাউস মাঠজুড়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পুরো সার্কিট হাউস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একাংশ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে উভয় গ্রুপের ১০ জন গুরুতর আহত হয়। ঘটনার পর বিপুল পরিমাণ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে সদরের চকরামপুরের আব্দুল হামিদের ছেলে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ মনজুরুল ইসলাম (২৮), পিরজিপাড়ার সাইদ আলীর ছেলে মোঃ শিমুল হোসেন শাহিন (৩৫), বাবুর পুকুরপাড়ের নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন (২৭), চক আমহাটির আবুল খায়েরের ছেলে মোঃ শাখাওয়াত হোসেন (২৬), শহরের মল্লিক হাটির আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ মশিউর রহমান (৪৫) ও মোঃ হাবিবুর রহমান চুন্নু (৫২) এবং মোঃ তোতা মিয়াকে (৫০) নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তোতা মিয়াকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসতিয়াক আহমেদ ডলার জানান, সংঘর্ষের সময় সার্কিট হাউজে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ছাড়া অন্য কোনো কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন না। সংঘর্ষের পরপরই কাউন্সিলের প্রধান বক্তা সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনসহ অন্য নেতারা নাটোর সার্কিট হাউসে আসেন।
সার্কিট হাউসে সংঘর্ষের জন্য নাটোরে সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান একে অপরকে দায়ী করেছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বলেছেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।