বালু তোলায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন ৩ হাজার বিঘা জমি , সর্বনাশ চাষীর
বালু তোলায় চাষির সর্বনাশ,পদ্মার ভাঙনে ১৫ দিনে বিলীন ৩ হাজার বিঘা জমি ।এছাড়া ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধভাবে নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করায় পানির গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। এতেই বাড়ছে নদীভাঙনের প্রবণতা। এ ঘটনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়াড়, মাজদিয়াড় ও ভুরকা এলাকার বাসিন্দারা। নদীভাঙনের শিকার ভুক্তভোগীরা বলেন, মরিচা ইউনিয়নের অর্ধেকের বেশি অংশ পদ্মার চর।
বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানিতে এসব জমি তলিয়ে যায়। কিন্তু এবার শুকনা মৌসুমে পদ্মা নদীতে আবার শুরু হয়েছে ভাঙন। মরিচা ইউনিয়নের মাজদিয়াড়-কোলদিয়াড় গ্রাম থেকে ভুরকা-হাটখোলাপাড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে এই পদ্মা নদীর ভাঙন। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে অনেক কৃষকের ফসলি জমি। হঠাৎ ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম এর মতে, সম্প্রতি অন্তত তিন হাজার বিঘা জমি বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার বিঘা জমিতে কৃষকের আবাদ করা শর্ষে, গম, ভুট্টাসহ মৌসুমি ফসল ছিল।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ভুরকা এলাকায় নদী থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। ভাঙন অব্যাহত থাকলে হুমকিতে পড়বে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। এ ছাড়া ভাঙন এলাকায় রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ কয়েকটি সরকারি বিদ্যালয়ও।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পদ্মা নদীর দৌলতপুর অংশে বৈধ বালুমহাল নেই। তারপরও অবৈধভাবে নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে পানির গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে নদীভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া উত্তোলিত বালু বহনের জন্য বড় বড় কার্গো বা ট্রলার ব্যবহার করা হয়। এসব কার্গো বা ট্রলার নদীপাড়ের পাশ দিয়ে চলাচলের সময় নদীতে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। এতে আরও বাড়ছে নদীভাঙনের তীব্রতা।
কোলদিয়াড় গ্রামের এক কৃষক বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল জব্বার। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দীন বলেন, মরিচা ইউনিয়নে জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সেখানে ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।