লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে নতুন চমক দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আজিজুর রহমান এবার সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এ পদে জয়ী হয়ে আবারও আলোচনায় আসেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে শ্রীরামপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাচনী ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়ভাবে এ ভোটকে ঘিরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। মোট ৪৫৩ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে আজিজুর রহমান বাচ্চু মোরগ প্রতীকে ২৬৬ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। অতীতে তিনি ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
শুধু সাধারণ সম্পাদক পদেই নয়, ওই নির্বাচনে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি পদে জয়ী হন মো. অলি উল্যা। তিনি ছাতা প্রতীকে ২৫৫ ভোট পান। অন্যদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট মাছ প্রতীকে ২৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
এই নির্বাচনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, বিএনপির শরিক দল বিএলডিপির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাৎ হোসেন সেলিম।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ইমাম হোসেন এবং ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এল রহমানসহ আরও অনেকে। তাঁদের উপস্থিতি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও বর্ণময় করে তোলে। স্থানীয় পর্যায়ের এ ধরনের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ বিএনপির তৃণমূল রাজনীতিকে আরও শক্তিশালী করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আজিজুর রহমান বাচ্চুর নির্বাচিত হওয়াকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন, তাঁর নেতৃত্ব ইউনিয়ন বিএনপিকে আরও সংগঠিত করবে। এ ছাড়া তাঁর পরিবারিক পরিচিতি ও মাহফুজ আলমের বর্তমান উপদেষ্টা পদও দলের তৃণমূলের মধ্যে আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের নেতৃত্ব নির্বাচন স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। দীর্ঘদিন পর এমন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি গঠিত হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। স্থানীয় নেতারা আশা করছেন, নতুন নেতৃত্ব ইউনিয়নের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করে তুলবে এবং আসন্ন জাতীয় রাজনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর বিজয়ী প্রার্থীরা সমর্থকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সাধারণ ভোটাররাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইছাপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।