জাতীয় নাগরিক পার্টির নেত্রী নীলা ইস্রাফিল অভিযোগ করেছেন, অসুস্থ অবস্থায় তার অনুমতি ছাড়াই হাসপাতালে স্বামীর স্থানে তুষারের নাম বসানো হয়েছে। ক্ষমা না চাইলে তিনি তুষারের গোপন ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দলের আরেক নেত্রী নীলা ইস্রাফিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন যে, তুষার তার কাছে ক্ষমা না চাইলে বা অনুশোচনা প্রকাশ না করলে তিনি তার "গোপন ও নগ্ন ভিডিও" জনসমক্ষে প্রকাশ করবেন।
শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে নীলা স্পষ্ট ভাষায় বলেন—
আমি বারবার বলছি, যদি আন্তরিকভাবে ক্ষমা না চাওয়া হয়, তাহলে আমি তুষারের নগ্ন ভিডিওটি প্রকাশ করতে বাধ্য হবো।
এর আগে নীলা ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়, সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্থায় তার অনুমতি ছাড়াই ভর্তি ফরমে স্বামীর নামের স্থানে সারোয়ার তুষারের নাম বসানো হয়েছে। নীলার দাবি— এটি শুধু একটি অনৈতিক কাজ নয়, বরং জালিয়াতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
তিনি বলেন—
ওই দিন আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, আমার নিজের পরিচয়, জীবনের সিদ্ধান্তের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সেই সময় সারোয়ার তুষার নিজের নাম আমার স্বামীর স্থানে বসিয়ে দেয়। এটি কোনো ভুল নয়, এটি আইনগতভাবে জালিয়াতি।
নীলা আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নথিতে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং তা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একই সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন অনুযায়ী অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন করাও অপরাধ।
তার অভিযোগ, আমার অনুমতি ছাড়া পারিবারিক পরিচয় বিকৃত করা শুধু আমার সামাজিক মর্যাদাকে আঘাত করেনি, বরং মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। ইউডিএইচআরের ধারা ৩, ৫, ১২ ও ২২ অনুযায়ী আমার ব্যক্তিগত মর্যাদা, গোপনীয়তা এবং আইনি নিরাপত্তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
নীলার আশঙ্কা, হাসপাতালের এই নথিতে ভুয়া তথ্য ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে, যা তার সামাজিক এবং আইনগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন—
-
অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত
-
দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি
-
তার প্রকৃত তথ্য পুনঃস্থাপন
-
অসুস্থ রোগীর অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে অপরাধকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ
নীলা ইস্রাফিল বলেন, "টা শুধু আমার লড়াই নয়, প্রতিটি মানুষের নিজের পরিচয়, মর্যাদা এবং অধিকারের জন্য লড়াই।
এ ঘটনায় এনসিপি অভ্যন্তরে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে এটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নৈতিকতার প্রশ্ন বড় আকারে সামনে এসেছে।