অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি
তারেক রহমান আরও বলেন, “যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি কার্যকর করতে হলে দরকার একটি গ্রহণযোগ্য ও নির্বাচিত সরকার। আজকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে, তা কারও বোধগম্য নয়। একবার বলা হচ্ছে সংস্কার হবে, আবার বলা হচ্ছে হবে না—এভাবে টালবাহানা চললে জনগণ কীভাবে আস্থা রাখবে?”
তিনি সরাসরি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা যদি রাষ্ট্র পরিচালনায় আগ্রহী হন, তাহলে পদত্যাগ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণের রায় পেলে আবার আসন গ্রহণ করুন। কিন্তু দায়িত্বে থেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”
তারেক রহমান সতর্ক করে দেন—“জনগণের বিশ্বাস ও ভালোবাসা যারা হারাবে, ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের যেকোনো পদক্ষেপ যেন জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
বিএনপির ‘ভিশন ২০৪১’—একাধিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ইঙ্গিত
তারেক রহমান তাঁর ভাষণে দেশের উন্নয়ন নিয়ে বিএনপির সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা কেবল সরকারে যাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। আমাদের ভিশন আছে—যেটা কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়নের পরিকল্পনা।”
তিনি ইঙ্গিত দেন, বিএনপি একটি সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি ও সুশাসনের ওপর ভিত্তি করে একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনায় কাজ করছে।
বিশেষ করে তরুণদের কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে 'তারুণ্য উন্নয়ন মিশন' নামে একটি নতুন কর্মসূচির কথা জানান তিনি। এর আওতায় ভবিষ্যতে দেশে লাখ লাখ তরুণকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বমানের কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন কী?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ সমাজকে সামনে রেখে তারেক রহমান যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন, তা আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিরই একটি অংশ। এতে একদিকে যেমন বিএনপি নিজেদের কর্মক্ষমতা দেখাতে পারবে, তেমনি তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা ও আকর্ষণও বাড়বে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তরুণদের মন জয় করতে পারলে যে কোনো দলই নির্বাচনী মাঠে বিশেষ সুবিধা পাবে। কারণ, দেশের মোট ভোটারের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই তরুণ, যাদের অধিকাংশই প্রথম বা দ্বিতীয়বারের মতো ভোট দেবেন।
বিএনপির বার্তা স্পষ্ট
তারেক রহমানের ভাষণে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা পাওয়া গেছে। বার্তা স্পষ্ট—তরুণদের ঘিরেই রাজনীতির আগামী গল্প লিখতে চায় বিএনপি।
সেইসঙ্গে চলমান অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন বিষয়ক অনিশ্চয়তা নিয়ে দলটি জনগণের সামনে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে চাইছে।
এখন দেখার বিষয়—সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই বার্তাকে কীভাবে নেয় এবং তরুণদের দৃষ্টি কেড়ে নিতে কে কতটা প্রস্তুত।