বাংলাদেশের রেলওয়ে স্টেশনগুলোর অনলাইন টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি এবং যাত্রীসেবা ও অবকাঠামোগত কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজধানীসহ দেশের নয়টি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনে অভিযান পরিচালনা করেছে। এ অভিযানে টিকিট কালোবাজারি ও অন্যান্য অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা উদঘাটন করা হয়েছে।
অভিযানটি ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, রংপুর, চট্টগ্রাম, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে একযোগে পরিচালিত হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে, অভিযানে ‘সহজ ডট কম’-এর সার্ভার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, ভিআইপি কোটার বাইরেও অতিরিক্ত টিকিট ব্লক করে রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া, যাত্রীসেবা ও অবকাঠামোগত কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগও পাওয়া গেছে। স্টেশনে অবস্থানরত যাত্রী ও অন্যান্যদের জন্য বিশ্রামাগারের অপ্রতুলতা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার অব্যবস্থাপনাও পরিলক্ষিত হয়। স্টেশনের পাবলিক টয়লেটগুলো ইজারা পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়ায় যাত্রীদের অতিরিক্ত মূল্য প্রদান করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে।
অনবোর্ড ট্রেন (বনলতা এক্সপ্রেস) পরিদর্শনে দেখা যায়, ট্রেনে পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাটেনডেন্টের অভাব রয়েছে এবং বরাদ্দকৃত টয়লেট টিস্যু ও সাবান সরবরাহ করা হয়নি। খাবারের মানও নিম্নমানের হলেও দাম অত্যধিক বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়।
দুদক জানিয়েছে যে, তারা ৬ জুন তারিখের টিকিট বিক্রয় সংক্রান্ত সার্ভার রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে এবং এটি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের দুর্নীতি রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সংস্থাটি আশ্বাস দিয়েছে।
এ ধরনের অভিযান দেশের রেল ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং যাত্রীদের সেবার মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং এর মাধ্যমে রেলওয়েতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।