close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিলেন নেতানিয়াহু..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Israeli PM Netanyahu nominates Donald Trump for the Nobel Peace Prize during a dinner meeting at the White House, citing his global peace efforts and key diplomatic breakthroughs.

হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।

 

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও নৈশভোজের সময় একটি বিস্ময়কর ঘোষণা দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানালেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার জন্য তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দিয়েছেন। এর জন্য তিনি নোবেল কমিটির কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন এবং সেই চিঠির একটি কপি স্বয়ং ট্রাম্পের হাতেও তুলে দিয়েছেন।

নেতানিয়াহু বলেন, তিনি (ট্রাম্প) আমাদের কথায় একের পর এক দেশে, একের পর এক অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছেন। এই যুগে তিনি এমন একজন নেতা, যিনি যুদ্ধের বদলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজছেন।

এই বৈঠকটি ছিল নেতানিয়াহুর তৃতীয় সফর ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সময়। দুই নেতা একান্তভাবে নৈশভোজে অংশ নেন, এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি এবং শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।

নেতানিয়াহুর দাবি, ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী একাধিক বিরোধে মধ্যস্থতা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান সংকট, সার্বিয়া-কসোভো সংঘাত, মিসর-ইথিওপিয়া বিরোধ এবং ইসরায়েল ও কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে শান্তি চুক্তি। অথচ এতসব শান্তি উদ্যোগের পরও এখনো তিনি নোবেল পুরস্কার থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

ট্রাম্প নিজেও বহুবার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে তিনি শান্তির পক্ষে কাজ করেছেন এবং নোবেল পুরস্কারের জন্য তার অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি বরাবরই দাবি করে আসছেন, তার আলোচনার কৌশল বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসনে কার্যকর হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে হামাস যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, “তারা সাক্ষাৎ করতে চায়। তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চায়।” ট্রাম্পের মতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরে এখন আর কোনো বড় বাধা নেই।

অন্যদিকে, নেতানিয়াহু গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, গাজা কখনোই একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হবে না। আমাদের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ সবসময় থাকবে।

যদিও নেতানিয়াহু-ট্রাম্পের মধ্যকার এই কূটনৈতিক সৌহার্দ্য আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে, ঠিক একই সময় হোয়াইট হাউসের বাইরে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী সেখানে জড়ো হয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’র অভিযোগ তুলে নানা স্লোগান দেন।

তাদের দাবি, ইসরায়েল ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং যুদ্ধাপরাধের দায় এড়াতে পারবে না। এই বিক্ষোভ স্পষ্টতই দেখিয়ে দেয়, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক মতবিভেদ এখনো তীব্র।

নেতানিয়াহু-ট্রাম্পের এই সাম্প্রতিক সাক্ষাৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। একদিকে ট্রাম্প ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পদে পুনরায় নির্বাচনের জন্য মাঠ গুছাচ্ছেন, অন্যদিকে নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের কর্তৃত্ব এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই মনোনয়ন শুধুমাত্র ট্রাম্পের শান্তির প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিতেই নয়, বরং একটি কৌশলগত রাজনৈতিক পদক্ষেপও। এটি একদিকে ট্রাম্পের সমর্থকদের মনোভাব দৃঢ় করবে, অন্যদিকে নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিক শান্তি আলোচনায় শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে আসবে।

No comments found