তিস্তায় পানি কমলেও দুর্ভোগে তিস্তাপাড়ের মানুষ

Akm Kaysarul Alam avatar   
Akm Kaysarul Alam
এ কে এম কায়সারুল আলম, লালমনিরহাট করেসপন্ডেন্টঃ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে টানা চার দিন ধরে লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। তবে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকে পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এলেও বন্যাদুর্গতদের ভোগান্তি কমেনি। 

দুপুর ২টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১.৯২ মিটার, যা বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে।

বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, সোমবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুরে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে টানা তিন দিন ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এসময় লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বহু গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

পাটগ্রামের দহগ্রাম,হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্দ্ধন, বাহাদুরপাড়া। 

সদর উপজেলা: খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল।


চারদিনের পানিবন্দি অবস্থার পর এখন নতুনভাবে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। গবাদিপশু, বৃদ্ধ, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষজন। ঘরবাড়ির ভেতরে মাচা বানিয়ে কিংবা উঁচু রাস্তায় অস্থায়ী চুলা বসিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। বাঁধের ধারে পলিথিন টাঙিয়ে রাখা হচ্ছে গবাদিপশুগুলোকে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ গোবর্দ্ধন গ্রামের দুদু মিয়া বলেন, “চারদিন ধরে পানিবন্দি আছি। তিস্তা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটছে।”

হাতীবান্ধা গড্ডিমারী গ্রামের ইলিয়াস  জানান, “সব রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। হাঁটু থেকে কোমর পরিমাণ পানি ঘরে। রান্না, খাওয়া, থাকা— সবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, “গত চার দিন পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এখন পানি কমলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।”

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, “পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে শুকনো খাবার ও জিআর চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে।”

לא נמצאו הערות