close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

থাকছে না ইভিএম, আসছে ‘না’ ভোটের বিধান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In the upcoming 13th National Parliamentary Election, EVMs will be scrapped and the ‘No’ vote system will return. Even single candidates must face ‘No’ votes, and tied results will lead to re-election..

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম বাদ দিয়ে ফিরছে ‘না’ ভোটের বিধান। নতুন নিয়মে একক প্রার্থীকেও ‘না’ ভোটের মুখোমুখি হতে হবে, সমান ভোটে হবে পুনঃনির্বাচন।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন দেশের ভোট ব্যবস্থা ও নিয়মকানুনে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আর ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে না। পরিবর্তে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বহু আলোচিত ও বিতর্কিত ‘না’ ভোটের বিধান, যা ভোটারদের প্রত্যাখ্যানের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।

সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত মুলতবি কমিশন সভা শেষে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। তিনি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পরিবর্তন যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ইভিএম প্রকল্প সম্পূর্ণ বাতিল করা।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সংসদীয় আসনে মাত্র একজন প্রার্থী থাকলেও তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা যাবে না। ভোটারদের হাতে থাকবে ‘না’ ভোটের অপশন। যদি ওই প্রার্থীকে ভোটের চেয়ে ‘না’ ভোট বেশি হয়, তাহলে সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই বিধান ভোটের প্রতিযোগিতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত দুই প্রার্থীর সমান ভোট হলে ফল নির্ধারণে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী ঠিক করা হতো। কিন্তু নতুন নিয়মে এই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে সমান ভোট পড়লে পুনরায় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, যাতে ভোটাররাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।

নির্বাচনে প্রার্থীদের জমা দেয়া হলফনামার তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হলে, নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারবে। প্রয়োজনে ওই প্রার্থীর সংসদ সদস্য পদও বাতিল করা হবে। এছাড়া প্রার্থীরা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান নিতে পারবেন, তবে এই অর্থ অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে, যাতে আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও সব প্রার্থীকে নিজ নিজ দলীয় প্রতীকেই ভোট করতে হবে। নতুন দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৮৪টি দলের মধ্যে ২২টি দল প্রাথমিকভাবে বিবেচনায় এসেছে। এসব দলের মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলছে। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশন ৮৩টি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে প্রাপ্ত আপত্তিগুলোও পর্যালোচনা করছে।

নির্বাচনী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তনগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করবে। বিশেষ করে ‘না’ ভোটের বিধান ভোটারদের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি প্রার্থীদের জনগণের কাছে আরও জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে। অন্যদিকে, ইভিএম বাতিল হওয়ায় প্রচলিত ব্যালট পদ্ধতিতে ফিরে যাবে ভোটদান প্রক্রিয়া, যা অনেক ভোটারের কাছে সহজবোধ্য হলেও ফলাফল ঘোষণায় কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় দলই নতুন বিধানগুলো নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে শুরু করেছে। তবে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ‘না’ ভোটের বিধান ফিরে আসায় গণতন্ত্রের চর্চা আরও শক্তিশালী হবে বলে অনেকে মনে করছেন।

Aucun commentaire trouvé