সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিক তাসনিম জারাকে নিয়ে অশালীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, এটি নারীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার পরিকল্পিত অপচেষ্টা।
সাংবাদিক তাসনিম জারাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেভাবে নগ্ন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ছড়ানো হয়েছে, তা শুধু নিন্দনীয় নয়—বরং তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারীদের হেয় করার একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ। এই হামলার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও কঠোর অবস্থান নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজনৈতিক নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো শোকজের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাসনিম জারার বিরুদ্ধে যে ধরণের অশালীন প্রচার চালানো হয়েছে, তা একটি নারীকে ব্যক্তিগতভাবে আঘাত করার পাশাপাশি, রাজনৈতিকভাবে নিরুৎসাহিত করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। কেবলমাত্র নারী হওয়ার কারণেই তাঁর পেশাগত কাজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’’
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু গোয়েন্দা সংস্থা ও তথাকথিত গণমাধ্যম যৌথভাবে এই আক্রমণে লিপ্ত হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার—একজন নারীকে জনসম্মুখে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আগ্রহী নারীদের ভয় পাইয়ে দেওয়া।
হাসনাত বলেন, ‘‘জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে নারীরা সাহসিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু সেই অভ্যুত্থানের পরপরই একজন নারীর বিরুদ্ধে এমন অপমানজনক ও আক্রমণাত্মক প্রচার মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের দলের উচিত ছিল এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জানতে পারি যে আমাদের আন্দোলনের অনেক আহত ও নেতৃত্বদানকারী ভাইবোনদের অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিকভাবে ভুল ছিল। তাই আমি অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সেখানে যেখানে বিভাজনের চর্চা চলছে, শহিদ ও আহতদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেখানে আমার উপস্থিতির কোনো প্রয়োজন অনুভব করিনি।’’
তিনি তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করে জানান, পরদিন ঢাকার বাইরে চলে যান, যেন নিজের মতো করে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা যায় এবং ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে চিন্তা করা যায়। সেইসাথে তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত ছিল জুলাই মাসের অসম্পূর্ণ ঘোষণাপত্রের প্রতি তাঁর এক প্রকার নীরব প্রতিবাদ।
নিউজের সারসংক্ষেপে বলা যায়, হাসনাত আব্দুল্লাহ তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে নারীদের সম্মান রক্ষায় যেমন দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন, তেমনি রাজনৈতিকভাবে যেকোনো ধরনের বিভাজনের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এই ধরণের কুরুচিপূর্ণ ও পরিকল্পিত প্রচারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মহলে আরও সচেতনতা তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন।