টানা বর্ষণে ডুমুরিয়ায় নাকাল জনপদ, সংকটে কৃষি, মাছ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অবকাঠামো..

Jahid sumon Crime Correspondent avatar   
Jahid sumon Crime Correspondent
টানা বর্ষণে ডুমুরিয়া উপজেলায় জলাবদ্ধতা চরমে, তলিয়ে গেছে ঘের, ফসল, স্কুল ও সরকারি ভবন—মানুষ, মৎস্য ও কৃষি তিনটিই আজ বিপর্যয়ের মুখে।..

 

বিশেষ পরিবেশ প্রতিবেদন | 

 

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় শ্রাবণের টানা বৃষ্টি যেন আর শুধু ঋতুবৈচিত্র্য নয়, রূপ নিয়েছে প্রতিনিয়ত ঘুরে আসা এক প্রাকৃতিক সংকটে। বৃষ্টির ধারাবাহিকতায় ভেসে গেছে জীবিকা, স্থবির হয়েছে জীবন। গ্রামের পর গ্রাম এখন পানির নিচে, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দীর্ঘ এবং পুনরুদ্ধার আরও অনিশ্চিত।

জলাবদ্ধতার চক্রে বন্দি জনপদ উপজেলার রেজিস্ট্রি অফিস চত্বরসহ গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ,সব জায়গায় পানি জমে থাকায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। কোমরসমান পানিতে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রশাসনিক কাঠামোও।

স্থানীয়রা বলছেন, "একদিন বৃষ্টি হলে তিন দিন আটকে থাকি আমরা। পানিতে নয়, ডুবে থাকি অনিরাপত্তায়।

অবৈধ দখলেই জলাবদ্ধতার মূল ব্যথা, ডুমুরিয়ার জলাবদ্ধতা কোনো আকস্মিক দুর্যোগ নয়—এটি জমে থাকা অব্যবস্থাপনার দীর্ঘস্থায়ী প্রতিফলন। অধিকাংশ খাল ও জলাধার স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে আছে।

একজন প্রবীণ বাসিন্দা বলেন,খাল আছে—নামটা শুধু মানচিত্রে। বাস্তবে সেখানে মাছ নেই, শুধু ইট আর মাটি।

কৃষি ও মৎস্য খাতে ঘা, উঠতি ফসল-ঘের বিপর্যস্ত স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, প্রায় ১৯১৫ হেক্টর সবজির জমি এবং ৬০০ হেক্টর আমনের বীজতলা পানির নিচে। শুধু তাই নয়, মাছ চাষিরা জানিয়েছে, হাজারো ঘেরের মাছ এখন পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

ঘের মালিক কার্ত্তিক সরকার বলেন,নেট দিয়ে মাছ আটকাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রকৃতি কোথায় শোনে! এক রাতেই বছরভর লালনের সব শেষ।

সরকারি অবকাঠামো ও শিক্ষায় অচলাবস্থা, রেজিস্ট্রি অফিস, বিদ্যালয়ের মাঠ ও ইউনিয়নভিত্তিক সড়কগুলো অচল হয়ে আছে। শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ, সরকারি কার্যক্রমে বিঘ্ন—দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা ছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণ অসম্ভব।

 একজন পরিবেশ বিদ বলেন , খাল ও জলাধার পুনরুদ্ধার প্রকল্প ইউনিয়নভিত্তিক খাল জরিপ ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান অবিলম্বে শুরু করতে হবে।

পানি সঞ্চালন পরিকল্পনা,প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বতন্ত্রভাবে ড্রেনেজ নকশা তৈরি এবং স্থানীয়ভাবে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রণয়ন প্রয়োজন।

ক্ষতিগ্রস্ত খাত পুনর্গঠন তহবিল,কৃষি, মাছ চাষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য জরুরি পুনঃবিনিয়োগ তহবিল গঠন করতে হবে।

পরিবেশ-সহনশীল অবকাঠামো সরকারি ভবন, বিদ্যালয় ও বাজারগুলোতে উঁচু জমিতে নির্মাণ ও পানি প্রবাহ উপযোগী নকশা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

 স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয়করণ দুর্যোগ পূর্বাভাস, জলাবদ্ধতা প্রতিরোধ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে ইউনিয়ন কমিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে আইনি কাঠামোর আওতায়

Nema komentara