মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের পর শিক্ষার্থীরা সাড়ে ১২টার মধ্যে সরকারের সঙ্গে দাবি নিয়ে কথা না হলে রাস্তা অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে। নিহত ২৭ ও আহত শতাধিক শিক্ষার্থীর ক্ষতিপূরণ ও সুবিচারের দাবি জানানো হয়েছে।
রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে সকাল থেকে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভে নামেন। সোমবার দুপুরে ওই কলেজ ক্যাম্পসে বিমান বিধ্বস্ত ও আগুন লাগার ঘটনায় নিহত ও আহতদের নিয়ে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন। তারা সরকারকে সরাসরি সতর্ক করে জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে দাবি নিয়ে আলোচনা না হলে রাস্তা অবরোধ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, “আমরা বুঝতে পারছি সরকার আমাদের কথা শোনবে না। তাই আমরা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিচ্ছি। যদি এর মধ্যে কেউ আমাদের সঙ্গে কথা না বলে, তাহলে রাস্তা অবরোধ করব। আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চাই, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট।”
আন্দোলনকারীরা ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’ এবং ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’ লেখা ব্যানার হাতে গোলচত্বরে সড়কের ওপর বসে প্রতিবাদ করেন। পুলিশ একাধিকবার সরে যেতে অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: নিহতদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা প্রদান, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য ক্ষমা চাওয়া, ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল এবং প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সংস্কার।
দুর্ঘটনা সোমবার দুপুর ১টার পর ঘটে, যখন একটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত বিমানে আগুন লাগে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভবনে স্কুলের শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল, যাদের মধ্যে অধিকাংশ হতাহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার অভিযান চালায়। পরে বিজিবি ও সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। আহতদের বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ২৫ জন শিশু বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। আহতের সংখ্যা শতাধিক, যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।