সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ না করায় দিনাজপুরে ৩১৬ টি মিলের  নিবন্ধন বাতিল..

Abdus Sattar avatar   
Abdus Sattar
সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ না করায় দিনাজপুরে ৩১৬ টি মিলের  নিবন্ধন বাতিল করেছে জেলা খাদ্যবিভাগ।..

 

খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা দিনাজপুরে সদ্য শেষ হওয়া আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬টি মিলের নিবন্ধন বাতিল করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ ।

 জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

  মিলমালিক বলছেন, মৌসুমের শুরু থেকে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি থাকায় লোকসানের আশঙ্কায় সরকারের সঙ্গে চাল সরবরাহে চুক্তি করেননি অনেকেই। বাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। অন্যদিকে চাল উৎপাদনেও খরচ বেশি পড়েছে। কয়েক বছর থেকে মিলাররা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করে আসছেন। সরকার যে দর দিয়েছে, তাতে প্রতি কেজিতে তাঁদের লোকসান গুনতে হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। লোকসান গুনতে গুনতে অনেক মিলমালিকেরই পথে বসার উপক্রম হয়েছে।


জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আপত্কালীন মজুত গড়তে গত বছরের ১৭ নভেম্বর শুরু হয় আমন সংগ্রহ অভিযান। সিদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের সময়সীমা ছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং আতপ চাল সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। যেখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৭ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন। আর সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ দশমিক ৮১০ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮০৫ দশমিক ৯৪০ মেট্রিক টন। মৌসুমে ধান-চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ৯১১টি সিদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল। মৌসুম শেষে এসব চুক্তিবদ্ধ মিল থেকে সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে ৪৮ হাজার ৭২৪ দশমিক ০৪০ মেট্রিক টন যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ১১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪৬০ মেট্রিক টন যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ শতাংশ এবং ধান সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ১৩ শতাংশ।

 


 বাংলাদেশ মেজর ও অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ধান এবং চালের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। মিলমালিকেরা তো লোকসান গুনেই আসছেন। সরকারের উচিত ধান-চালের দামে সামঞ্জস্য রেখে সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষক ও সব মিলমালিককে বাধ্য করা। নিবন্ধন বাতিল করে যদি পরবর্তী সময়ে আবার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা হয়রানি করা হয়, সেটি সমীচীন হবে না।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, জেলায় চুক্তিযোগ্য সিদ্ধ চালকলের সংখ্যা ১ হাজার ২১০ এবং আতপ চালকল মিলের সংখ্যা ১০। এবার চুক্তিকৃত সিদ্ধ চালকল মিলের সংখ্যা ৯১১ এবং আতপ চালকল ৮৩। একাধিকবার তাগাদা দিয়েও অনেকে চুক্তিবদ্ধ হননি। এসব মিলের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য বিভাগের এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

 

No comments found