বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ জাতির জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে সংস্কারের আড়ালে দেশে এসেছে দুঃশাসন, গুম-খুন আর গণতন্ত্র হত্যার রাজনীতি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সতর্ক করে বলেছেন, সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করলে দেশ ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়বে। তিনি বলেন, "সংস্কার, সংস্কার করে কালক্ষেপণ করলে মহাবিপদ ডেকে আনবে। আমরা ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিন সরকারের সংস্কার দেখেছি, সেই সংস্কারের ফলেই জাতি পেয়েছিল শেখ হাসিনার দানব সরকার, যে সরকার ভয়ংকর দুঃশাসন কায়েম করেছিল।"
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজিত দোয়া মাহফিলে বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, "আমরা ১/১১ সরকারের সংস্কারের জিকির ভুলে যাইনি। তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা বিএনপির গঠনতন্ত্র ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। সেই সংস্কারের আড়ালে এমন একটি সরকার ক্ষমতায় এসেছিল যারা দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। ইলিয়াস আলী, চৌধুরি আলম, জাকির, সুমনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করা হয়েছিল। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল, অর্থনীতি ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা সংস্কারের বিপক্ষে নই, তবে জনগণের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে যে প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার সেটি বিএনপি সমর্থন করে। কিন্তু সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচনের পথে বাধা দেওয়া মেনে নেওয়া হবে না। আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হয়েছে, আমরা সেই ঘোষিত সময়েই নির্বাচন চাই।"
রিজভী দাবি করেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নয়, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তিনি বলেন, "তার দেখানো পথেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। আজ আমরা দেশনেত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।"
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজিক আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন ইয়াসিন আলী, ডা. জাহিদুল কবিরসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
রিজভীর বক্তব্যে মূলত সরকারের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়—সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ বা রাজনৈতিক চালবাজি আর সহ্য করা হবে না। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতেই বিএনপি সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।