close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সংসদ দরকার: আনিসুল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Newly elected Jatiya Party Chairman Anisul Islam Mahmud says reforms require an elected parliament, but doubts remain about holding a credible election in the current political climate.

জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত সংসদ অপরিহার্য, কিন্তু বর্তমান পরিবেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

জাতীয় পার্টির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, বর্তমান সরকার সংস্কারের কথা বললেও সেগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না নির্বাচিত সংসদ ছাড়া। একটি প্রকৃত সংস্কার প্রক্রিয়া চালু করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন একটি গঠনমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই রয়েছে গভীর সংশয়।

শনিবার রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিন সারা দেশ থেকে আগত প্রায় তিন হাজার কাউন্সিলরের কণ্ঠভোটে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলীয় চেয়ারম্যান এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদ সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং মো. মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

আনিসুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু সরকার বর্তমানে বিভাজনের রাজনীতি করছে, যা জাতীয় ঐক্যের পথে প্রধান বাধা।”

তিনি বর্তমান দেশের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজি ও হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। সাংবাদিকরাও নিরাপদ নন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনত হয়েছে, যা পুরো দেশকে এক অস্থির পরিবেশে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কিভাবে সম্ভব, তা বোধগম্য নয়।”

ব্যারিস্টার আনিস রাজনৈতিক দুর্নীতির সমালোচনা করে বলেন, “যারা আজ চাঁদাবাজি করছে, তারা সবাই রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় আছে। ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি চোখে পড়ে না, কিন্তু ক্ষমতা হারালেই মামলা হয়। আবার ক্ষমতায় ফিরলেই মামলাগুলো উঠে যায়। এই দ্বিমুখী রাজনীতি বন্ধ হওয়া জরুরি।”

এর আগে সকালেই জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন মো. মুজিবুল হক চুন্নু। প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।

সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক চুন্নু। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, আরিফুর রহমান, নুরুল ইসলাম মিলন, জিয়াউল হক মৃধা এবং খান ইসরাফিল খোকন।

কাউন্সিলে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি-জেপি মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য দিদারুল আলম দিদার এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়।

কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে দলীয় তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম জহির আনুষ্ঠানিকভাবে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব হিসেবে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নাম ঘোষণা করেন। কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন মোস্তফা আল মাহমুদ এবং আরিফুর রহমান খান।

এই কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি নতুন নেতৃত্ব পেয়ে রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে আনিসুল ইসলামের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে দলটি নির্বাচনী সংস্কার ও জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আপসহীন অবস্থান নিতে চায়।

No comments found