সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপির ৪ নেতার পদত্যাগ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Four leaders of the National Citizen Party (NCP) in Shibchar, Madaripur, have resigned voluntarily citing personal and organizational dissatisfaction, sparking intense discussions in the local politic..

মাদারীপুরের শিবচরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমন্বয় কমিটির চার নেতা ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক অসন্তুষ্টির কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে। শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে শিবচর প্রেস ক্লাবের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির চারজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা একসঙ্গে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাদের এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন—শিবচর উপজেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শাকিল খান, সদস্য মো. রিয়াজ রহমান, সদস্য মহিউদ্দিন এবং সদস্য কাজী রফিক। তারা সবাই গত ১৫ জুন ঘোষিত কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এই কমিটি গঠিত হয়েছিল। কমিটির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল তিন মাস অথবা উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য মো. রিয়াজ রহমান। তিনি বলেন, “গভীর ভাবনা-চিন্তা ও দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পর আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, ব্যক্তিগত কারণ এবং কিছু সাংগঠনিক অসঙ্গতির কারণে আমরা এনসিপির দায়িত্ব ও কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। যারা এতদিন আমাদের পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

পদত্যাগের অন্যতম কারণ হিসেবে তারা অভিযোগ করেন, শিবচরে দল পরিচালনার দায়িত্ব কিছু ‘অযোগ্য ও বিতর্কিত’ ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এসব ব্যক্তিরা আদর্শিক, নৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে অযোগ্য হওয়ায়, দলের নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগী কর্মীরা যথাযথ সম্মান ও মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই অবস্থা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেও তারা মন্তব্য করেন।

চার নেতা আরও জানান, তারা কোনো রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসেননি; বরং অতীতে কোটা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণআন্দোলনে ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়িয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের মতে, দলীয় আদর্শ ও নীতিমালা ভঙ্গ হলে তার সঙ্গে আপস করা যায় না। এজন্য দীর্ঘ আত্মবিশ্লেষণ শেষে তারা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এনসিপি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বর্তমানে তারা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন বলেও ঘোষণা দেন। শিবচরের মানুষের উদ্দেশে তারা বলেন, “আমাদের কর্মকাণ্ডে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে কারও মনে আঘাত দিয়ে থাকি, দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় পর্যায়ে এনসিপির জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। কারণ, পদত্যাগকারী চারজনই ছিলেন সক্রিয় ও প্রভাবশালী সংগঠক। এই পদত্যাগের ঘটনায় দলটির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড কিছু সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শিবচরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—এই পদত্যাগের পেছনে আসল কারণ কী, এবং এনসিপি নেতৃত্ব শূন্যস্থান পূরণে কী পদক্ষেপ নেবে। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভক্তি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

No comments found