গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে বলেছেন, ভুল টিম ও মিষ্টি কথায় দেশ চালিয়ে গেলে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভাঙা সম্ভব নয়।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান আবারও তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি। তার অভিযোগ, ইউনূস স্যার সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন, যার ফলে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে।
গত কয়েকদিন আগেই রাশেদ খান শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমাতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এমনকি তখন তিনি ড. ইউনূসের এই সময়সীমা ঘোষণার প্রশংসাও করেছিলেন। কিন্তু নতুন করে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি ভিন্ন সুরে কথা বলেন, যেখানে ইউনূসের নীতিনির্ধারণ ও দল নির্বাচনের কড়া সমালোচনা উঠে আসে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে রাশেদ খান লিখেছেন, “আমরা বিচার ও সংস্কারের কথা শুনলেই মনে করি— এই বুঝি অতীতের নৃশংসতার বিচার হয়ে গেল, অপরাধীরা শাস্তি পেল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সময় চলে গেলে সেই সাধন সম্ভব হয় না। ঠিক এই পরিস্থিতিই হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের ক্ষেত্রে।”
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা ভুল লোক বেছে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন, যাদের তিনি তুলনা করেছেন ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকের’ সাথে। রাশেদ খানের মতে, দেশের দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভাঙতে গেলে অভিজ্ঞ ও দৃঢ় নেতৃত্ব প্রয়োজন, কিন্তু ইউনূসের নির্বাচিত দল সে যোগ্যতা রাখে না।
রাশেদ খান আরও বলেন, “ড. ইউনূস ফ্রান্স থেকে ফিরে যাদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ বানালেন, তারা ইন্টার্নদের মতো। এই ইন্টার্নদের হাতে ১৬ বছর ধরে শক্তিশালী হওয়া ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সার্জারি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে এই ব্যবস্থা পুরো রাষ্ট্রে আরও গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সচিবালয়, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি— প্রতিটি জায়গায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সেটআপ শুধু বহালই নয়, বরং আরও শক্তিশালী হয়েছে।”
তার মতে, গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রথম দায়িত্ব ছিল ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ও ফ্যাসিবাদী কাঠামো সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করা এবং শাস্তির মুখোমুখি করা। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন আগের কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখেই দেশ চালাচ্ছে।
তিনি মন্তব্য করেন, “বিচার ও সংস্কারের যে মিষ্টি কথা আমরা শুনি, সেগুলো কেবল মুখের কথা। বাস্তবে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এনজিও সার্কেলের মানুষ, যারা মিষ্টি কথায় পারদর্শী হলেও বাস্তবায়নে উদাসীন ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। এই কারণেই বছরের শেষে এসেও আমরা শুধু নতুন স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি, বাস্তবে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসছে না।”
রাশেদ খান তার বক্তব্যের শেষাংশে আক্ষেপ করে বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্যই হয়তো খারাপ। বারবার পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখিয়ে যোদ্ধারা জীবন দিলেও রাষ্ট্রের গুণগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন বাস্তবায়িত হয় না।