রিপোর্ট মেহেদী হাসান : পান্তা-ইলিশ, আলপনা আর উৎসবে মেতে ওঠা শহর—বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ যেন নরসিংদীবাসীর জন্য শুধু একটি নতুন দিন নয়, এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্তও খুলে দিয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠা সিএনজি ও অটোবাইক স্ট্যান্ডগুলোতে এবার শুরু হলো শৃঙ্খলা ফেরানোর এক সার্থক প্রয়াস।
পৌরসভার উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ার বিনিময়ে এই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন একজন স্থানীয় তরুণ—মো. আলমগীর হোসাইন। তাঁর কণ্ঠে নেই অহঙ্কার, আছে দায়িত্বের গাম্ভীর্য।
“টাকা কামাতে আসিনি—এসেছি পরিবর্তন আনতে”, বলছিলেন আলমগীর। “শুধু টোল আদায় নয়, যাত্রীর নিরাপত্তা, চালকদের সম্মান আর স্ট্যান্ডের শৃঙ্খলাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
ইজারার আওতায় রয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্ট্যান্ড—আরশিনগর, শিক্ষা চত্বর, ভেলানগর, পুরান বাসস্ট্যান্ড, শাপলা চত্বর, রজনীগন্ধা—যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করেন। এই স্ট্যান্ডগুলো এতদিন ছিল বিশৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি। কারা উঠবে, কারা নামবে, কে টোল নেবে—সবই ছিল অনিয়মে ভরা।
এখন বদলের হাওয়া। চালকরা বলছেন, “আগে সবাই নিজের মতো চলত, এখন একটা নিয়ম এসেছে। আলমগীর ভাই নিজের লোক, বুঝে কথা বলেন, নিয়ম মানতে বলেন।”
পৌরসভা বলছে, এই ইজারা শুধু রাজস্ব আয়ের পথ নয়, বরং একটি সামাজিক রূপান্তরের অংশ।
স্বচ্ছ দরপত্র, আইনি কাঠামোর প্রয়োগ ও স্থানীয় অংশগ্রহণ মিলিয়ে একটি ‘মডেল’ স্ট্যান্ড ব্যবস্থাপনার রূপরেখা তৈরি হচ্ছে—যা দেশের অন্যান্য পৌর এলাকায় অনুসরণযোগ্য হতে পারে।
শহরের ছন্দ বদলাচ্ছে, এবং সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন একজন সাধারণ তরুণ—যিনি নিজেকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে চাচ্ছেন কাজে, কথায় নয়।
নববর্ষের সূর্য যেভাবে প্রতিদিনের গণ্ডিকে ভেঙে আনে নতুন দিগন্ত, তেমনি শহরের প্রতিদিনকার গন্তব্যগুলোতে শৃঙ্খলা ও সেবার নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে এই উদ্যোগ।