close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

শুল্ক হার ১৫ শতাংশের নিচে নয়, ঘোষণা ট্রাম্পের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Donald Trump has announced a new trade policy where the minimum tariff on imported goods in the US will be no less than 15%, starting August. Countries with poor trade ties may face even steeper rates..

ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন—আগামী আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি পণ্যে শুল্ক হার শুরু হবে ১৫ শতাংশ থেকে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক দুর্বল এমন দেশের ক্ষেত্রে এই হার হবে আরও বেশি।

বিশ্ববাণিজ্যে নতুন দিকচিহ্ন তৈরি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আগস্টের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দেশের পণ্যে শুল্ক হার ১৫ শতাংশের নিচে থাকবে না। ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি সরল ও শক্তিশালী শুল্ক নীতি অনুসরণ করব। যার হার ১৫ থেকে শুরু করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাবে, কারণ আমরা সবাইকে এক চোখে দেখছি না। যারা আমাদের সঙ্গে ন্যায্যভাবে ব্যবসা করেনি, তাদের শাস্তি পেতেই হবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ‘প্রোটেকশনিস্ট’ (সংরক্ষণবাদী) বাণিজ্যনীতির বহিঃপ্রকাশ। বিশেষ করে যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি আছে বা কূটনৈতিক সম্পর্কে জটিলতা রয়েছে—তাদের জন্য এ নীতি হবে কঠোর ও একতরফা।

এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশে শুল্ক নীতির চিঠি পাঠাবেন। তখনও শুল্ক হার নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও, এখন ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন—শুরু হবে ১৫ শতাংশ থেকে। এর নিচে কোনো হার থাকবে না।

এদিকে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার কিছু ছোট দেশের জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ হার প্রস্তাব করা হচ্ছে।” তবে বাস্তবে কী হার কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট দেশের অবস্থান ও আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর।

ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুর দিকে বলা হয়েছিল, চুক্তির মাধ্যমে পারস্পরিক ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু এখন ট্রাম্প নিজেই বলছেন, এসব শুল্কপত্রই ‘চুক্তি’ হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ, তিনি আর আলোচনায় নয়, বরং একতরফাভাবে শুল্ক আরোপের পথেই হাঁটছেন।

তবে কিছু দেশকে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। যেমন—জাপানের ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হবে, যদি জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে এবং মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

এই প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প আসলে বোঝাতে চাচ্ছেন—যেসব দেশ আমেরিকান বাজারে প্রবেশাধিকার দেবে এবং মার্কিন বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে, তারা তুলনামূলক কম শুল্কে ব্যবসা করতে পারবে।

অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এই কঠোর নীতি কার্যকরের আগেই আলোচনায় বসার জন্য হোয়াইট হাউসের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনাকে ট্রাম্প নিজে 'গুরুত্বপূর্ণ' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা কোনো দেশকে বাদ দিতে চাই না। কিন্তু যদি কেউ মার্কিন ব্যবসার জন্য দরজা বন্ধ করে রাখে, তবে আমরাও তাদের জন্য দরজা বন্ধ করে দেব—শুল্কের মাধ্যমে।”

বিশ্ববাজারে ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরপরই পণ্যের দাম ও বিনিয়োগ পরিস্থিতিতে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নতুন শুল্ক কাঠামোর তথ্য জানার অপেক্ষায়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন শুল্কনীতির ফলে বিশ্ববাণিজ্যে বড় রকমের মন্দা দেখা দিতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যারা প্রতিনিয়ত ব্যবসা করে থাকে, তাদের ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।

Nema komentara