সত্যজিৎ দাস:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আলোচিত কলেজছাত্র হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে,উদ্ধার হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত গামছা,মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল।
গত ৭ জুলাই সকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা বাগানের ১ নম্বর সেকশনে একটি গাছের নিচে গলায় বেল্ট পেঁচানো অবস্থায় হৃদয়ের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও,তদন্তে বেরিয়ে আসে নির্মম হত্যার গল্প।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম-সেবার নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা এবং সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমানের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে সিসিটিভি ফুটেজ,তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো;মোঃ কাজল মিয়া (২০),টমটম চালক ও মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২১),বাদাম বিক্রেতা। দুজনেই বর্তমানে শ্রীমঙ্গল শহরের শাহীবাগ এলাকায় অবস্থান করছিল।
তাদের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন এবং ওয়াইফাই অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে আর্থিক সংকটে পড়েন। কাজল মিয়ার কাছ থেকে ধার নেওয়া ২২ হাজার টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
ঘাতক কাজল ও সিরাজ চাকরি দেওয়ার কথা বলে হৃদয়কে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু চাকরি না হওয়া এবং পাওনা টাকা না ফেরত দেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে।
৬ জুলাই রাত ১১টার দিকে হৃদয়কে কাকিয়াছড়া চা বাগানে নিয়ে গিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে গামছা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর মৃতদেহকে আত্মহত্যার ছোঁয়া দিতে বেল্ট দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
পরে তারা হৃদয়ের মোবাইল ফোন মাত্র ২৫০ টাকায় বিক্রি করে এবং মোটরসাইকেল নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার রাজাপুর গ্রামে পালিয়ে যায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটি এখন বিচারাধীন।