নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গলাকাটা এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে স্থানীয় এলাকায় চরম চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক অজ্ঞাত যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে চরম চাঞ্চল্য। বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের কুড়িপাড়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন নদী তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হতেই চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং শতশত উৎসুক জনতা নদীর তীরে ভিড় জমায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে নদীর জলে ভেসে ওঠে ওই যুবকের লাশ। ভাসমান লাশটি প্রথমে এলাকাবাসীর নজরে এলে মুহূর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। মাথাবিহীন মরদেহের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে বিকেলের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
কাচাঁপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানো হয় এবং প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, “বিকালে খবর পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মাথাবিহীন অবস্থায় লাশটি ভেসে উঠেছে। কাঁচপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
পুলিশের ধারণা, এটি কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হতে পারে। হত্যার পর লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যেই আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে এবং লাশ শনাক্তকরণে স্থানীয় থানাসহ বিভিন্ন স্থানে তথ্য পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধারের খবরে স্থানীয়রা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন, এ ধরনের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড এলাকায় নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা তৈরি করেছে। এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, কে বা কারা এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিলো?
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এবং হত্যাকাণ্ডের ধরন পরিষ্কার হবে। পাশাপাশি, নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা গেলে তদন্ত প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
নদীর তীরবর্তী এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে যেকোনো তথ্য প্রদানে। এখনো পর্যন্ত কোনো পরিবার বা ব্যক্তি নিখোঁজের অভিযোগ করেনি, তবে পুলিশ বলছে শিগগিরই নিহতের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা সফল হবে।
নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড স্থানীয় জনমনে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, অপরাধীরা ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।