ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: "আজকের ছাত্র-ছাত্রী আগামীদিনের ভবিষ্যৎ"-এই বাক্যটি শুনতে যতটা উদ্দীপনামূলক, বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে ভালুকা উপজেলার বাঁশিল এলাকার জন্য। এই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নেই কোনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ফলে আশেপাশের গ্রামগুলোর শতাধিক শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার জন্য নির্ভর করতে হয় দূরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-পনাশাইল আলিম মাদ্রাসা, পনাশাইল কেজি স্কুল এবং আশকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওপর।
এই পথ সহজ নয়। প্রতিদিনই পাড়ি দিতে হয় এক ভয়াবহ নদী। ব্রিজ বলতে আছে কাঠের তৈরি একটি অস্থায়ী সাঁকো এবং পুরনো কাঠের তৈরি একটি নৌকা। বর্ষা মৌসুমে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। নদীর পানি বেড়ে গেলে সাঁকো বা নৌকা কোনোটাই আর নিরাপদ থাকে না। ফলে দিনের পর দিন বিদ্যালয় মুখী হওয়া বন্ধ হয়ে যায় অনেক শিক্ষার্থীর।
স্থানীয়রা জানান, ভালুকা সদর ইউনিয়নের বাঁশিল ও হবিরবাড়ী এলাকা মিলিয়ে প্রায় ১৬০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী এই সংকটের শিকার। লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন প্রাণ হাতে করে নদী পাড়ি দিতে হয় তাদের। আর একটু অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে প্রাণহানি। ইতোমধ্যে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে, যা এক গভীর শঙ্কা তৈরি করেছে অভিভাবকদের মাঝে।
বাঁশিলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকুতি একটি নিরাপদ ব্রিজ দিন। তাদের দাবি, একটি সেতু নির্মাণ করে দিলে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, এলাকার সাধারণ জনগণও উপকৃত হবে। বর্ষাকালজুড়ে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার প্রয়োজন পড়বে না। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারবে এবং শিক্ষা বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা পাবে একটি প্রজন্ম।
এ ব্যাপারে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও এর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা। অবিলম্বে একটি নিরাপদ সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, “আমরা চাই না শিক্ষার জন্য আর কোনো শিশুকে নদীর পানিতে তলিয়ে যেতে হোক। একটি ব্রিজ পারে এই এলাকার ভবিষ্যত বদলে দিতে।”
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে বাঁশিল ও হবিরবাড়ীর জনগণ।



















